১৯৭২ সালে জনসংহতি সমিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং জাতিগত রক্ষার্থের ১৯৭৩ সালে অস্ত্র কাধে তুলে নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে যারা সন্ত্রাসী, বিচ্ছিন্নতাবাদী ইত্যাদি নেতিবাচক শব্দ আখ্যায়িত করে বিভিন্নভাবে দমন নিপীড়ন করতে চাইছে পাহাড়ে জুম্ম জনগনকে। তাই স্পষ্ট বলে চাই যদি অতিতে পথে আবারো যেতে হয় তাহলে কারো জন্য শুভকর হবে না।
মঙ্গলবার ( ২রা ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় রাজার মাঠ প্রাঙ্গনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি'র ২৮ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহ সাধারণ সম্পাদক উ উইন মং জলি।
প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহ সাধারণ সম্পাদক উ উইন মং জলি বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধানে সম্পৃক্ত হতে চাই। মাথা উঁচু করে পৃথিবীতে বাচঁতে চাই। তাদের কাছে আমাদের প্রশ্ন- যারা সংবিধানের সম্পৃক্ত হতে চাই বাংলাদেশে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই তারাই কি বিচ্ছিন্নতাবাদী নাকি যারা সংবিধানে সম্পৃক্ত হতে দিতে চাই না । যারা নানা অপবাদ দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে ঠেলে দিতে চাই তারাই বিচ্ছিন্নতাবাদী। এসব অপবাদ থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ বিনির্মানে জুম্ম জনগনকে সম্পৃক্ত হওয়া সুযোগ দিতে হবে। তা নাহলে জুম্ম জনগনের অতীতে ঐতিহ্য আছে সেই ঐতিহ্য জনসংহতি ভূলে নাই। অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু প্রশিক্ষণ জমা দেয়নি বলে মন্তব্যে করেন তিনি।
উ উইন মং জলি বলেন, দীর্ঘ দুই যুগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমাপ্তি টানতে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে বিএনপি সরকারের সময় ১৬ বার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ৭ বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব আলাপ-আলোচনার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং জেএসএস সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্রীয় বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।তবে এই চুক্তি সম্পন্ন করার ২৮ টি বছর পার হলেও আজও এই চুক্তি সম্পূর্ণ ভাবে বাস্তবায়িত করা হয় নি। ফলে “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি আজ প্রতারণার দলিলে পরিণত হয়েছে।”চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আস্থা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভূমি কমিশনের কার্যক্রম শুরু করতে গেলেই তথাকথিত বাঙালি সংগঠনগুলো হরতাল ডাকে এবং মিটিং বানচাল করে। তাই সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
সমাবেশে জেএসএস বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি সুমন মারমা"র সভাপতিত্বে জেএসএস নেতা থুই মং প্রু মারমা, হিল উইমেন ফেডারেশনের জেলা সভানেত্রী উলিসিং মারমা,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলা কমিটির সদস্য সিং ওয়াই মং মারমা,পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্কের আইন সম্পাদক মংনু মারমা হেডম্যান,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মেঞোচিং মারমাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।