কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিভিন্ন সময় গড়ে ওঠেছে অবৈধভাবে ২৯ টি ইটভাটা। এ সকল ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোয়া প্রতিনিয়ত দূষিত করছে চারপাশের পরিবেশ । এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং ১৩৭০৫/২০২২ এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৯/০১/২০২৫ তারিখে প্রদত্ত আদেশ ২৪/০২/২০২৫ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনে নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং তার বাস্তবায়ন করে জেলা প্রশাসক,কুষ্টিয়া।
জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ইটভাটাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এ বছর উপজেলার বেশিরভাগ ভাটা মলিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অবৈধভাবে তারা আর ইটভাটা পরিচালনা করবেনা এবং নতুন করে পরিবেশকেও হুমকির মুখে ফেলবেন না। তাই তারা ইটভাটার জমিতে শুরু করেছে নানা ধরনের চাষাবাদ।
কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার কয়েকজন ইটভাটা মালিক এরই মধ্যে সেরে ফেলেছেন ভাটা পরিচালনা করার সকল প্রস্তুতি। এসকল ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করার লক্ষ্যে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে সংগ্রহ করা ও গাছের গুড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য চলছে নানা আয়োজন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইটভাটা মালিক জানান, গেল বছর কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক হাইকোর্টের রীট পিটিশন অনুযায়ী আমাদের ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেয় সকল ইটভাটা এলাকায়।
যার কারনে এ বছরে আমরা উপজেলার বেশির ভাগ ইটভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি পাশাপাশি ইটভাটার জন্য ব্যবহৃত জমিতে রীতিমতো বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ শুরু করেছি।
তারা আরও জানান, আমাদের ক্ষমতার কোন বল নেই আমরা সরকারের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে ইটভাটা পরিচালনা করতে পারব না। যদি সরকারিভাবে কোনদিন ইটভাটা পরিচালনার জন্য অনুমতি পাই তাহলে তবেই আমরা ইটভাটা চালাবো।
এদিকে কয়েকটি ইটভাটা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা বলছেন মালিক পক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করে পরিবেশ ও নিজের ক্ষতি করার চাইতে ইটভাটার জন্য ব্যবহৃত জমিতে ফসল উৎপাদন করা অনেক ভালো। তাই এখন আমরা ইটভাটাই ব্যবহৃত সব জমিতে ধান সহ নানা ধরনের খাদ্য ফসল চাষাবাদ করছি।
অন্যদিকে উপজেলার সকল ইটভাটা হাইকোর্টের নির্দেশন অনুযায়ী জেলা প্রশাসক, কুষ্টিয়া বন্ধ করে দিলে এর সাথে জড়িত কিছু শ্রমিকরা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেরই দিন কাটবে অনাহারে। যার কারনে তারা তাদের জন্য বৈধ কর্মসংস্থান তৈরি করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে এই উপজেলায় কয়েকজন ভাটা মালিক সরকারি সকল নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইটভাটা পরিচালনার লক্ষ্যে এরই মধ্যে সেরে ফেলেছেন সকল প্রস্তুতি। কেউ নতুন ইট প্রস্তুতের জন্য ফর্মা কাটছেন কেউ মাটি সংগ্রহ করছেন। আবার কেউ কেউ দৌড়ে বেড়াচ্ছেন এ অফিস সে অফিস ইটভাটা পরিচালনার জন্য মৌখিক অনুমতির লক্ষ্যে।
কিন্তু দৌলতপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সরকারি নির্দেশনার বাহিরে যেয়ে ইটভাটা পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই, যদি তার ব্যত্যয় ঘটে এবং অবৈধভাবে কেউ যদি ইটভাটা পরিচালনা করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি বিধি অনুযায়ী সকল ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে সচেতন মহলের দাবি অপরিকল্পিতভাবে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা পরিচালনা করলে পরিবেশ ও মানুষের যে ক্ষতি হয় তা অপূরণীয়। তাই পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সকল ইটভাটার লাগাম টেনে ধরতে পারলেই পরিবেশ ফিরে পাবে তার স্থিতিশীলতা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
