× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বিলুপ্তের পথে পিঁড়েতে বসে চুলকাটা

বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)

০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৪ পিএম

মানুষের সৌন্দর্যের অন্যতম উপকরণ চুল আর দাড়ি, যা মানুষের ব্যক্তিত্বকে শাণিত করে। এই চুল-দাড়ি নিয়ে যুগে যুগে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। সেই কারণে কেশ বিন্যাসের কারিগরদের অর্থাৎ নরসুন্দরদের কদর ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতিধারায় এসেছে পরিবর্তন, লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া।

সেই ধারায় হাট-বাজারের বটবৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাটে, ফুটপাতে কিংবা গ্রাম-গঞ্জের জলচৌকিতে বা ইটের ওপর সাজানো পিঁড়িতে বসে নাপিতের হাঁটুর কাছে মাথা পেতে দিয়ে আবহমান গ্রাম-বাংলার মানুষের চুল-দাড়ি কাটার সেই আদি পরিচিত দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না। দক্ষতার অভাবেও অনেকে পুরানো নিয়মে পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। আধুনিক যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে এখন তারা হার মানতে বসেছেন।

বর্তমান এ পেশায় যারা নিয়োজিত আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। বাকিরা এখন প্রায় সব বেকার। আয়-রোজগার কম আর এ পেশায় খুব বেশি একটা সুবিধাজনক না থাকায় গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে হারিয়ে যাচ্ছেন সেই চিরপরিচিত নরসুন্দররা। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কিছু সাপ্তাহিক হাট-বাজারের পাশাপাশি গ্রামগঞ্জে ঘুরে এখনো নিভে যাওয়া সলতের মতো জেগে রয়েছেন কিছু মেঠো নরসুন্দর।

এ পেশায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় এখন আর সেই আগের দিনের মতো বাছ-বিচার নেই। কোনো বিশেষ শ্রেণির মানুষ এখন আর এই পেশায় যুক্ত হয় না। বরং সব সম্প্রদায়েই কেউ না কেউ এ পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি বিউটি পার্লারও পিছিয়ে নেই। হাট-বাজারে বটতলা বা অশ্বত্থ গাছের নিচে নরসুন্দরদের মাটিতে বসে লাইন দিয়ে কাজ করতে দেখা যায় না। কোনো সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানেও চুল, দাড়ি কাটাতে ডাক পড়ে না নরসুন্দরদের।

কথা হয় ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ওয়াব্দাবাজারের এলাকার বাসিন্দা ধীরেন রায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, হাটও গ্রামে গ্রামে ঘুরে বসে পুরানো দিনের মতো চুল-দাড়ি কামানোর প্রথাকে আঁকড়ে ধরে রুটি রুজির সন্ধানে আজও সময় পার করছি। বয়স এখন তার প্রায় ৮০। হাট ও গ্রামে ঘুরে প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। সাপ্তাহিক হাটের দিন ৩শ’-৪শ’ টাকা আয় হয়। অন্যান্য দিনগুলোতে কোনো গ্রামে ঘুরে দিন ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকার কাজ হয়। আর জন প্রতি চুল কাটা ৩০ টাকা ৪০ টাকা করে দেয়। কোনো দিন তাও হয় না। আজ পর্যন্ত হাটবাজারের বড় আয়না ঝুলানো দোকান দিতে পারিনি। তাই আজও টুল-পিঁড়িতে বসে কাজ করছি।

একই গ্রামের রতন শীল (৪০) জানান, তিনি ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে প্রতিদিন বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতেন এবং তার কাজে সহযোগিতা করতেন। সেই থেকে কাজের সূচনা, বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলা ওয়াব্দা বাজার এলাকায় প্রতিদিন সড়কে ফুটপাতে বসে তারা কয়েকজন মিলে কাজ করছেন বলে জানান।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.