× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মাটি অপসারণ নামে পাহাড় নিধন

বান্দরবান প্রতিনিধি

০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:১২ পিএম

বান্দরবানের মনোরম পাহাড়ি প্রকৃতি এখন করুণ আর্তনাদ করছে। টানেলের মাটি অপসারণ নামে নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা মহোৎসব। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও আইন থাকলেও থেমে নেই এই ধ্বংসযজ্ঞ। ফলে দিনদুপুরে উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে চলছে নির্বিচারে পাহাড় কাটা। এতে ক্ষতির প্রভাব পড়ছে পাহাড় ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর।

পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। তবুও অনেক জায়গায় প্রশাসনের চোখের সামনে, কখনও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায়, এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চলছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। আবার কেউ কেউ উন্নয়নের অজুহাতে দিনদুপুরে চালাছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। 

জানা গেছে, বাস টার্মিনালের চলাচল টানেলের উপর ধ্বসে পড়া মাটির পানি চুইয়ে পড়েছিল বর্ষাকালে। সেই মাটি অপসারণ করতে কন্ট্রাক নিয়েছেন মাটি খেকো ইয়াছিন। কিন্তু মাটির অপসারণ নামে কয়েক ফুট দূরে পাহাড় কাটা হচ্ছে। অভিযোগ আছে-  মাটি খেকো ইয়াছিন যে পাহাড়ের হাত দিবে সেই পাহাড় সাবার করে সমতল রুপে পরিণত করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান জেলা শহরের পৌর বাস টার্মিনাল টানেল সংস্কারের নামে চলছে বিশাল একটি পাহাড় কর্তন। স্কেভেটর দিয়ে দিনে রাতে সমানতালে পাহাড় কেটে ৪-৫টি ডাম্পার ট্রাকে করে নিচু ভূমি ভরাটে মাটি বিক্রি করছে ইয়াছিন নামে এক পাহাড় খেকো। শহরের সাঙ্গু উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের ভিতরে পাহাড়টি অবস্থান হওয়ায় স্কুলের ভিতর দিয়ে মাটি পরিবহনের কারণে চারিদিকে ধুলাবালির কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও অতিরিক্ত ধুলাবালির শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার কারণে বর্ষায় পাহাড় ধ্বসে বড় ধরনের দূর্ঘটনারও আশংকা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

পাহাড় কাটার বিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম এর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টানেলের পাশে পাহাড় কাটার বিষয়ে আমাদের থেকে কোন ধরনের অনুমতি নেয় নাই বা আমি অনুমতি দিই নাই। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। তবে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।  

এ বিষয়ে পাহাড় কাটার কাজের সাথে জড়িত ইয়াছিন বলেন, বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক টানেলের পাশ থেকে মাটি সরানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে। ওনাদের নির্দেশেই আমরা পাহাড় কাটতেছি।

বান্দরবান উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. এরশাদ বলেন, আমরা পাহাড় কাটার বিষয়ে কিছুই জানি না, এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বিস্তারিত বলতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো. ইয়াছির আরাফাত এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল ধরেননি।

বান্দরবান সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বলেন, বর্ষায় ধ্বসে গিয়ে টানেলের উপরে পড়া মাটি অপসারণের জন্য একবার মৌখিকভাবে বলা হয়ছিল। তবে পাহাড় কাটার বিষয়ে বলা হয়নি। তারপরও আমরা সরেজমিনে তদন্ত করে যদি পাহাড় কেটে থাকে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে পরিবেশবিদরা বলছেন, উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পাহাড় কাটা এবং বনধ্বংসের ফলে যা পরিবেশ ও সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন। অনিয়ন্ত্রিতভাবে পাহাড় কাটা শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্যই নষ্ট করছে না, বরং স্থানীয় জনগণের জীবনের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। তাই সরকারের উচিত, প্রকৃতি এবং স্থানীয় জনগণের অধিকার রক্ষা করে সুষ্ঠু ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এইভাবে পরিবেশ, সমাজ এবং অর্থনীতির সামগ্রিক উন্নতি সাধন করা সম্ভব।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.