ভোলার চরফ্যাশনে বোরকা পড়ে ফিল্মি স্টাইলে স্ত্রীকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
স্বামী ফরহাদ তার বাড়ীতে একটি নির্জন ঘরে স্ত্রীকে তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে নির্যাতন করেন। এসময় স্বামীকে বাবা ডেকেও রেহাই পাইনি স্ত্রী। পরে স্ত্রী কোনরকম প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নেন। সেই বাড়ির লোকজন তার পরিবারকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে।বুধবার উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ফরহাদ ওই এলাকার লিটন সিকদারের ছেলে। স্ত্রী সুমাইয়া চরফ্যাশন পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুল্লাহর মেয়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমাইয়ার অভিযোগ, দেড় বছর আগে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সুমাইয়া দেখে তার স্বামী ফরহাদ মাদকাসক্ত। এবং বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবন করে তাকে নির্যাতন করতো। সে এক পর্যায়ে সিন্ধান্ত নেয় স্বামীর সাথে সংসার করবেনা। প্রায় ৮ মাস পর স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এবং একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন। বুধবার সকালে সুমাইয়া কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তার পিছন থেকে একটি সিএনজি আসলে সে সিএনজিতে উঠেন।
তবে তার স্বামী সেই সিএনজিতেই বোরকা পড়ে নারী সেজে বসে আছে। সিএনজি চালক সুমাইয়াকে বলে পৌর শহর থেকে একটু দূরে তার স্ত্রী অপেক্ষা করছে। এই বলে সিএনজি একটি অচেনা রাস্তা দিয়ে স্বামী ফরহাদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে গেলে সুমাইয়া দেখতে পান বোরকা পরিহিত নারীই তার স্বামী। পরে একটি নির্জন ঘরে নিয়ে তাকে তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে অমানবিক নির্যাতন করেনে। এসময় তার গলায় ওড়না পেচিয়ে স্বাসরোধ করেন। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাবা ডেকেও রেহাই পাইনি সুমাইয়া। সে কোনরকম প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে ওই এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেই বাড়ির লোকজনদেরকে পুরো বিষয়টি বলেন। পরে তারা সুমাইয়ার বাবা মাকে খবর দিলে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সুমাইয়ার বাবা হাবিবুল্লাহ জানান, মেয়ের জামাতা ফরহাদ মাদকাসক্ত হওয়ায় মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে মেয়েকে তুলে নিয়ে এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জামাতা ফরহাদের উপযুক্ত বিচার চান তিনি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী ফরহাদ আত্মগোপনে চলে যান। তার ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানাযায়নি।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ভিক্টিমকে দেখে আসবে এবং ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।