শেরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ৪ দিনের নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২৮ জুন শনিবার সকালে শহরের বটতলা এলাকার শেরপুর ইউনাইটেড (প্রাঃ) হাসপাতালে ওই ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। এদিকে ঘটনার পর নবজাতকের স্বজন ও উৎসুক জনতা ভিড় জমায় ওই হাসপাতালে। ওইসময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে পরিবেশ।
নবজাতকের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার ইউনাইটেড ক্লিনিকে শেরপুর শহরের চাপাতলী এলাকার ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী আবেদা বেগম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। শনিবার দুপুরে তাদের ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে স্বজনরা এসে কেবিনে নবজাতক শিশুকে না পেয়ে হাসপাতালের দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক দিদারুল ইসলামকে জানান। তবে এরপরও তারা কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলে সেখানে কালো বোরকা পরিহিত এক নারীকে নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, নবজাতক চুরি ও চিকিৎসায় অবহেলাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ রয়েছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
নবজাতকের মা আবেদা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, আমার বৃদ্ধ মাকে রুমে রেখে আমি শৌচাগারে গিয়ে ফেরত আসার পর দেখি আমার কন্যা নেই। হাসপাতালে সিকিউরিটি গার্ড, সিসিটিভিসহ এত লোক থাকতে বাচ্চা কিভাবে চুরি হয়? আপনারা আমার বাচ্চাটাকে ফেরত এনে দেন। আমার বাচ্চা না পেলে আমি মরে যাব।
নবজাতকের বাবা ফিরোজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের অন্যান্য জায়গায় সিসিটিভি কাজ করলেও যেখান থেকে আমার বাচ্চা চুরি হইছে সেখানের সিসিক্যামেরা কাজ করে না। এত বড় হাসপাতালের সিসিক্যামেরা নষ্ট থাকে কিভাবে? নিশ্চয় চুরির সাথে এদের কেউ জড়িত আছে। আমি তাদের বিচার চাই। আর আমার বাচ্চা ফেরত চাই।
অভিযোগের বিষয়ে শেরপুর ইউনাইটেড (প্রাঃ) হাসপাতালের ব্যবস্থাপক দিদারুল ইসলাম বলেন, কিভাবে চুরি হয়েছে তা আমরা জানি না। আর সিসি ক্যামেরার মেমোরিতে জায়গা না থাকায় ফুটেজটি খুঁজে পাচ্ছি না। বাচ্চা চুরির সাথে আমরা কোনভাবেই জড়িত নই। আমরা সাংবাদিক, পুলিশ প্রশাসন ও সচেতন মহলের সহযোগিতায় বাচ্চাটির উদ্ধার চাই।
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মিজানুর রহমান ভূঁঞা বলেন, নবজাতকের স্বজনদের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসাথে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করতে আমাদের টিম কাজ করছে।