× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

দশ মাস ধরে বেতনহীন শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় চলছে স্কুল কার্যক্রম

উবাসিং মারমা,রুমা প্রতিনিধি।

২৮ জুন ২০২৫, ১৫:৫৪ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় একটি বেসরকারি জুনিয়র হাই স্কুলে দশ মাস ধরে শিক্ষক ও শিক্ষিকারা কোনো বেতন ছাড়াই পাঠদান করে চলেছেন। বিদ্যালয়টির একাডেমীক স্বীকৃতি রয়েছে কিন্তু এমপিও ভক্ত নয়।  ফলে শিক্ষক-কর্মচারীরা ন্যায্য  বেতন ভাতাদি থেকে  বঞ্চিত হচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।

বিদ্যালয়টি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে শতাধিক ছাত্রছাত্রী এখানে অধ্যয়নরত। শুরুতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিয়মিত কিছু সম্মানী পেতেন, যা স্কুল পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও চাঁদা থেকে প্রদান করা হতো।

কিন্তু বিগত বছরখানেক ধরে আর্থিক সংকটে পড়ে বিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে গেছে, অনেকেই নিয়মিত বেতন দিতে পারছে না। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মানি ভাতা তাও কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। তবুও দায়িত্ববোধ ও শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা থেকে তাঁরা নিয়মিত পাঠদানে যুক্ত রয়েছেন।

বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, “আমরা পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। তবুও প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে স্কুলে এসে ক্লাস নিচ্ছি। শুধু ভেবেই চলছি আমরা না পড়ালে এই ছাত্রছাত্রীরা কোথায় যাবে?”

একজন নারী শিক্ষক বলেন, “বছরখানেক হলো কোনো বেতন পাইনি। ছাত্রছাত্রীদের টাকায় যতটুকু চলে, সেটাও এখন যথেষ্ট না। অভাবের সংসারে শিক্ষকতা ধরে রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।”

অভিভাবকদের একজন বলেন, “এই শিক্ষকরা না থাকলে আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়ত। আমরা চাই, সরকার যেন দ্রুত স্কুলটিকে স্বীকৃতি দিয়ে এমপিও ভুক্ত করে। 

রুমা উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, “বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত নয় বলেই সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা ইতোমধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে বলেছি। তাদের আবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রক্রিয়াধীন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠন করা। 

তিনি আরও বলেন, “এমপিওভুক্ত হলে বিদ্যালয়টি নিয়মিত সরকারি সহায়তা পাবে এবং শিক্ষকদের বেতন নিশ্চিত হবে।”

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  আদনান চৌধুরী বলেন আমরা শিক্ষকদের বেতনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।এবিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।“বিদ্যালয়ের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। শিক্ষকদের এই আত্মত্যাগ প্রশংসনীয়। 

তিনি আরও জানান, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে যেন বিদ্যালয়টির কার্যক্রম ব্যাহত না হয় এবং শিক্ষকরা সম্মানজনক ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান  স্কুলটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন এবং দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য জানান, “আমরা নিজেরা কষ্ট করে চালিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এইভাবে চলা সম্ভব নয়। আমরা দ্রুত স্বীকৃতির জন্য আবারও আবেদন করব।”

শিক্ষকরা বলছেন, শুধু সরকারি স্বীকৃতি পেলেই সমস্যার সমাধান হবে না চাই দ্রুত এমপিওভুক্তি ও স্থায়ী বাজেট সহায়তা।

এই সংকট নিরসনে রুমা উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সকল মহলের উদ্যোগ ও সহানুভূতি একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষকদের ত্যাগ যেন ব্যর্থ না হয়, সেই প্রত্যাশা রইল এলাকাবাসীর।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.