× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

দুই হাত নেই, তবুও থেমে নেই হোসেন

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৩:০৯ এএম

হোসেন

বৈদ্যুতিক তারের সাথে জড়িয়ে দুই হাত হারিয়েছে হোসেন। তবুও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে এই ছোট্ট শিশু। জীবনযুদ্ধে জয়ী এই শিক্ষার্থী দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে ডান পা দিয়ে লিখে পড়ালেখা করেছেন। হোসেন এখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছেন।

হোসেন পড়াশোনা শেষ করে চাকুরিজীবি হতে চায়। প্রতিষ্ঠিত হতে চায়।

কৃত্রিমভাবে তার দুইটি হাত লাগানো গেলে হোসেন তার প্রয়োজনীয় কাজ নিজেই করতে পারবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তার বাবা-মা।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ আগষ্ট উপজেলায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দোতলা নির্মাণাধীন ভবনে উঠে  খেলাধুলা করার একপর্যায়ে নির্মাণাধীন ভবনের পার্শ্বস্থ অরক্ষিত বৈদ্যুতিক খুটির ১১ হাজার  ভোল্টের তারের সাথে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে হোসেনের জীবন রক্ষার্থে দুই হাত কেঁটে ফেলতে হয়।

হোসেন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড চার্চ কলোনীতে বসবাসরত দরিদ্র কৃষক শাহাবউদ্দিন ও রহিমা বেগমের  ছেলে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম নম্বর সে। সে বর্তমানে উত্তর চরমানিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।

হোসেনের মা রহিমা  বেগম বলেন, প্রাইমারি স্কুল থেকে পঞ্চম  শ্রেণি পাস করলে তাকে যখন হাই-স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে গেলাম তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হোসেনকে ভর্তি করতে চাননি। যার হাত নেই সে লিখবে কিভাবে এই প্রশ্ন করে প্রধানি শিক্ষক। হোসেন পা দিয়ে লিখে পঞ্চম শ্রেনি পাস করেছে। অনুরোধ করলে পরে স্কুলে ভর্তি করেন। আমার  ছেলে  হোসেন খুব  মেধাবী এবং বর্তমানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী।

তিনি আরও জানান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মাণধীন দোতলা ভবনের অরক্ষিত বৈদ্যুতিক তার জড়িয়ে দুই হাত হারালেও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের কেউ কোনো খোঁজ খবর নেননি এবং অদ্যবধি পযর্ন্ত কোনো অনুদান  দেননি।

হোসেনের দুর্ঘটনার পর ভবনের ছাদে উঠার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

হোসেন জানায়,  বাবা-মা ও শিক্ষকদের  অনুপ্রেরণায় আমি পড়াশোনা করতে পারছি। 

হোসেনের বাবা শাহাবুউদ্দিন জানান, হোসেনের ওই দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ থেকে ৯  লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে আমি শূন্য, ওরা পাঁচ ভাইবোন।  অভাবের সংসারে ওদের পড়াশোনা করানোর খরচ  জোগাতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়।

উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে যদি কৃত্রিম হাত লাগানো  যেত তাহলে প্রতিভাবান  হোসেন ফিরে  পেত আগের মতো স্বাভাবিক জীবন।

সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে হোসেনের পরিবার।

উত্তর চর মানিকা মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন জানান, হোসেন মেধাবী ও প্রতিভাবান। পা দিয়ে লিখলেও অনেকের চেয়ে হাতের লেখা সুন্দর । আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকরা হোসেনের প্রতি আন্তরিক।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.