নানান সমস্যায় জর্জরিত বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাস মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের। কর্তৃপক্ষের অসচেতনতা অবহেলা এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ভুতুড়ে পরিস্থিতির শিকার হয়েছে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। দীর্ঘ দুই যুগ আগে টার্মিনাল নির্মান হলেও পরবর্তীতে কোনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের জন্য নেই কোন বিশ্রামাগার, নেই টয়লেটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।কোন ধরনের তদারকি ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নোংরা এবং অপরিচ্ছন্ন টার্মিনালের চারপাশ। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় টার্মিনালের বেশীর ভাগ অংশ। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের। এভাবেই বছরের পর বছর চলে আসলেও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বাগেরহাট জেলার আভ্যন্তরীণ ১৮ টি রুটসহ রাজধানী ঢাকা ও সারা দেশের সঙ্গে যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে দুই যুগ আগে পৌর এলাকার দুই একর জমির উপর বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সেই থেকে বাগেরহাট পৌরসভা এটি নামমাত্র রক্ষণাবেক্ষণ করছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বেড়েছে দূরপাল্লার বাস, প্রতিদিন চলাচলের যাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৫ থেকে প্রায় ২০ হাজার। তবুও বাড়েনি যাত্রী সেবার মান। অধিকাংশ দূরপাল্লার বাস পার্কিং করা হয় রাস্তার পাশে। অনেক কাউন্টার ও টার্মিনালের বাইরে। যাত্রীদের উঠা নামানো করা হয় টার্মিনালের সামনে খুলনা বাগেরহাট মহাসড়কের উপর।দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্য নেই কোন বিশ্রামাগার, টয়লেটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
সংস্কার না হওয়ায় বড় বড় খানাখন্দে ভরে গেছে টার্মিনাল এলাকা। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই টার্মিনালের ভিতরে ও আশেপাশে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায় টার্মিনালের পুরো এলাকা। ফলে চালক ও যাত্রীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। অন্যদিকে সীমানা প্রাচীর ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতে চোর ও নেশা খোরদের দখলে চলে যায় পুরো বাস স্ট্যান্ড এলাকা।
একাধিক বাসের শ্রমিক ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দূরপাল্লার বাস ও যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি বাগেরহাট বাস টার্মিনালের সেবার মান। যাত্রীদের জন্য তৈরি হয়নি কোন বিশ্রামাগার, নেই পর্যাপ্ত টয়লেটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় বাস স্টান্ড। তখন গাড়ি নিয়ে টার্মিনালে প্রবেশ করা সম্ভব হয়না বলে প্রতিনিয়ত গাড়ির সরঞ্জাম চুরি হয়ে যায়। যাত্রীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি।
বাগেরহাট জেলা বাস মালিক সমিতির আহ্বায়ক মশিউর রহমান সেন্টু বলেন, বর্ষা মৌসুমে বাস স্টান্ডে অতিরিক্ত পানি হওয়ায় কোন গাড়ি স্টান্ডে অবস্থান করতে পারে না।চলাচলের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যার কারনে মালিক ও শ্রমিকদের ঝুকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। বাস টার্মিনালটি দ্রুত সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) টিএম রেজাউল হক রিজভী বলেন, সিটিসিআরপি প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত আরো তিন একর জায়গা অধিগ্রহন করা হবে। মোট ৫ একর জায়গার উপর একটি আধুনিক মানের বাস টার্মিনাল রুপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে দ্রুত সংস্কার এর মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা হবে এই বাস টার্মিনাল।