নওগাঁর মান্দা উপজেলার আইওরপাড়া গ্রামে একটি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ কে কেন্দ্র করে রাতে বৈদ্যুতিক লাইন বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের দোকানে আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল এবং নগদ টাকা লুটসহ ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগ উঠেছে আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে আইওরপাড়া গ্রামে আইওরপাড়া চুয়ারপুর আব্দুল গফুর ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ ছিল, কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নেয় মাদ্রাসাটি পুনরায় চালু করা হবে। সেই সাথে মাদ্রাসার নিজ সম্পত্তির উপর একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু এখানে মাদ্রাসা হওয়া নিয়ে বিরোধিতা করেন আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা। গত ১৬ তারিখ গ্রামবাসীরা মাদ্রাসাটির নামে একটি সাইনবোর্ড লাগাই মাদ্রাসার নিজস্ব সম্পত্তির উপর।
কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পাশের হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা তার দলবল নিয়ে সাইনবোর্ডটি ভেঙে উপড়ে ফেলে দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে পুলিশ এসে দুই পক্ষকেই বুঝিয়ে শান্ত করে রেখে যায়, কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পরপরই মাসুদ রানার নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক লোকজন রাত ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টা লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাই। লুটপাট এর ঘটনাটি ওই সময় থানায় জানানো হলে অনেক রাত হয়েছে বলে পুলিশ আসতে পারবেন না বলে জানান সেই সাথে ভুক্তভোগীদের থানায় গিয়ে মামলা করার কথা জানান মান্দা থানা পুলিশ। সরজমিনে দেখা যায় মান্দা উপজেলার আইওরপাড়া বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দুর্বৃত্তের যেখানে একটি মুদির দোকানের সব মালামাল লুট সহ সিসিটিভি ক্যামেরা, মনিটর ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সেই সাথে ক্যাশে থাকা নগদ ২ লক্ষ টাকা লুট করা হয়েছে পাশেই ছিল একটি কম্পিউটারের দোকান যেখানে ফটোকপি প্রিন্টার মেশিন সহ মূল্যবান সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে একটি পোল্ট্রি মুরগির দোকান ছিল যেখান থেকে প্রায় তিনশটি মুরগি লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লুট হয়ে যাওয়া মুদি দোকানের মালিক সাদেকুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমার সাথে কোনো পক্ষেরই কোন দ্বন্দ্ব ছিল না অথচ রাতের আঁধারে আমার দোকানে লুটপাট এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় আমি বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা করি আর দোকানে লুট করা হয়েছে আমার দোকান পুরো ফাঁকা আমি কোথা থেকে এই লোন শোধ করবো এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
কম্পিউটার দোকান মালিক রমজান বলেন আমার দোকানের কয়েকটি কম্পিউটার প্রিন্টার মেশিন ফটোকপি মেশিন সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দামি যন্ত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পরে দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে আমার কোন দোষ ছিলনা আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। মুরগির দোকানদার মামুনুর রশিদ জানান আমার দোকানে প্রায় ৩০০ টি মুরগি ছিল ওই রাতে আমার দোকান থেকে সব মুরগি নিয়ে যাওয়া হয় এবং আমার দোকানের মালামাল সব পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয় আমি গরিব মানুষ এই দোকান থেকেই আমার সংসার চলে আমি এখন কিভাবে চলবো। এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মাসুদ রানার সাথে একাধিকবার ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলেননি।
এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, আমি রাতে খবর পেয়েছিলাম কিন্তু ওই মুহূর্তে থানায় পুলিশের সংখ্যা কম ছিল তাই ঘটনা স্থলে পুলিশের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরে পুলিশ পাঠানো হয়নি। তবে এ বিষয়ে এক পক্ষের অভিযান পেয়েছি এখন তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।