× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আশা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সফল মৎস্য উদ্যোক্তা হরিনাকুন্ডুর আলিম

এম. এইচ রুবেল, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।

১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৩৪ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃত মুজিবর রহমানের সন্তান আব্দুল আলিম, যিনি ২০১৯ সালে চারাতলা বাজার এলাকায় ট্যাবার বিলে সাড়ে ৯ একর জমিতে ৩টি পুকুর লিজ নিয়ে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এককভাবে পাবদা-তেলাপিয়া, দেশী ট্যাংরা মাছের মিশ্রচাষ শুরু করেন। শুরুতে মাছ চাষে কিছুটা লাভ হলেও ২০২১ সালে করোনার ছোবলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তিনি। সে বছর লাভ তো দূরের কথা চরম আর্থিক সংকটের কারণে মাছের খাবার কেনার পয়সা জোগানো কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সে বছর লোকসান গুনতে হলেও হাল ছাড়েননি আলিম।

চরম হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় একদিন ঝিনাইদহ সদর জেলার আশা-ভালকি বাজার ব্রাঞ্চে ঋণের জন্য গেলে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোঃ নাছির উদ্দীনের নিকট থেকে আশা'র ঋণের সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের পরামর্শে "মৎস্য চাষ প্রকল্প" খাত থেকে তিনি ৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এরপর ঝিনাইদহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা, তেলাপিয়ার পোনা এনে পুকুরে ছাড়েন। যথানিয়মে পুকুরে মাছের খাদ্য প্রয়োগ এবং পরিচর্যা শুরু করেন। মাছ দ্রুত বড় এবং তা বাজারে বিক্রি করেন। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে মাছ চাষে বেশ লাভ হয় তার। দ্রুত লাভ হওয়ায় আরও বেশি করে মাছ চাষের আগ্রহ জন্মে আলিমের।

সম্ভাব্যতা যাচাই করে আশা এনজিও'র নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত "মৎস্য চাষ প্রকল্প" খাত থেকে ২য় পর্যায়ে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জমি খনন করে নতুন পকুর তৈরী করেন। পুকুর প্রস্তুত করে আলিম পাঙ্গাস এবং কার্পজাতীয় মাছের পোনা ছাড়েন। নিয়মিত খাদ্য প্রদান এবং পরিচর্যা করতে থাকেন। মাছ লালন পালন করে স্থানীয় মাছের আড়তে বিক্রয় করতে থাকেন। এতে সে বছরেই খরচ বাদে লাভ হয় প্রায় ৭লাখ টাকা।

শুরু হয় তার সফলতার পথচলা। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। পুকুরের আয়তন বাড়িয়ে দেন আলিম। লিজ নেন আরও চারটি পুকুর। বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে তিনি সফল একজন মৎস্য উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। শুরুতে ৩টি পুকুরে চাষ শুরু করলেও বর্তমানে তার পুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭টিতে। আব্দুল আলিম বর্তমানে ৩৫ একর আয়তনের পুকুরে মিশ্রভাবে তেলাপিয়া, পাবদা, দেশি ট্যাংরা, রুই কাতলা, মৃগেল মাছ চাষ করছেন। তার মাছ বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। মাছ ব্যবসায়ীরা জলাশয়ে গিয়ে মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। মাছ চাষ করে তিনি প্রতি বছর প্রায় ২০-২২ লাখ টাকা আয় করছেন। এছাড়া পুকুর পাড়ের সবজি এবং কলা বিক্রি করে মাসে বাড়তি আয় করেন আরও ৩৫০০০ টাকা। তার উদ্যোগ থেকে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

আব্দুল আলিম জানান, আশা এনজিও'র মৎস্য চাষ প্রকল্প খাতের ঋণের অনেক সুবিধা। এই ঋণের সার্ভিসচার্জ খুব কম। তাছাড়া মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। তিনি আরও জানান, আশা অফিসের টেকনিক্যাল অফিসার কিলন চন্দ্র রায় নিয়মিত আমার মাছের প্রকল্প পরিদর্শন, মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। তাছাড়া আমি গত ৩ বছর যাবত আশা ভালকি বাজার ব্রাঞ্চ থেকে "মৎস্য চাষ প্রকল্পে" খাতের ঋণ গ্রহণ করে আসছি। ঋণের পুরো টাকা প্রকল্পে বিনিয়োগ করে উপার্জনের পাশাপাশি কিস্তি চালাতে আমার কোন কষ্ট হয়না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আব্দুল আলিমের সফলতা দেখে গ্রামের অন্যরাও ঝুঁকে পড়েছেন মাছ চাষে। তার এই উদ্যোগে আশা এনজিও’র কারিগরি ও ঋণ সহায়তা এবং সরকারি সহায়তা প্রদানের উদ্যোগকে সবাই প্রশংসা করছে।
এ ব্যাপারে আশা এনজিও'র টেকনিক্যাল অফিসার (কৃষি) কিলন চন্দ্র রায় বলেন, “আব্দুল আলিমের এই সফলতার পেছনে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা এনজিও'র নিজস্ব অর্থায়নে "মৎস্য চাষ প্রকল্প" খাতের আওতায় তাকে মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার এই সাফল্য অন্য মাছ চাষিদের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।”

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.