রাজশাহীর মোহনপুরে কৃষক আলতাফ হোসেন (৪৮) কে অপহরণ করে মাথা থেকে মগজ বিচ্ছিন্ন করে চাঞ্চল্যকর ও নারকীয় হত্যাকান্ডের প্রধান দুই আসামী রাসেল ও শরিফুল কে ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ০১:৪৫ মিনিটে ফরিদপুরের সালথা থানার সিংহ পোতাপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কৃষক কে অপহরণ করে মাথা থেকে মগজ বিচ্ছিন্ন করে চাঞ্চল্যকর ও নারকীয় হত্যাকান্ডের প্রধান দুই আসামী রাজশাহীর মোহনপুর থানার ধুরইল গ্রামের রুস্তম আলীর দুই ছেলে রাসেল (২৪) ও শরিফুল ইসলাম (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, আটক আসামীরা নিহত কৃষক আলতাফ আলী'র প্রতিবেশী। এজাহারনামীয় আসামীদের সাথে জমি-জমা ও রাস্তার জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৯ মার্চ রাত ৮ টায় আসামী শরিফুল গভীর নলকূপ থেকে জমিতে পানি নেওয়ার জন্য আলতাফকে জমিতে যেতে বলে। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নিহত ভিকটিম জমিতে পানি নেওয়ার উদ্দেশ্যে গেলে জমিতে পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে আলতাফ ও শরিফুল এর মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীগন লাঠি-সোটা নিয়ে গিয়ে আলতাফকে মারপিট, রক্তাক্ত জখম করে ও অপহরণ করে। অপহরণের পর থেকেই এজাহারে উল্লেখ করা সব আসামী এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় এবং পালিয়ে যায়।
পরে নিহত আলতাফকে পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় অনেক খোঁজাখু্ঁজি করে না পেলে ঐ জমিতে মানুষের মাথার মগজ সদৃশ দেখতে পায়। এতে তাদের সন্দেহ হয়। ৭ দিন পর গত ১৬ মার্চ মোহনপুরের তুলসীক্ষেত্র বিলের কাছে জমিতে কৃষকেরা পানি সেচ দিতে গেলে ডোবা থেকে একটি মাথা ছাড়া লাশ পায় এবং লাশটি ভিকটিমের বলে শণাক্ত করে তার পরিবার।
ঐ নারকীয় ঘটনা ও হত্যাকান্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ভীতির সৃষ্টি করে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি দেশব্যাপী প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়াতেও ব্যাপক সাড়া ফেলে। এ বিষয়ে মোহনপুর থানায় নিহত আলতাফ'র ছেলে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মামলার পর এজাহারে উল্লেখ করা সব আসামী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদেরকে আত্মগোপন করে রাখে। এ ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৫ রাজশাহী ও র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি যৌথ দল অভিযান চালিয়ে আসামী রাসেল ও শরিফুল ইসলাম'কে ২৬ বুধবার রাত ১টা ৪৫ মিনিটে আটক করে। আসামীদেরকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহীর মোহনপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।