কুয়েট প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অতিক্রম হলেও এখনো হলে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত হলে থাকার ঘোষণা তাদের। তবে সকাল থেকে হল ছাড়তে শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
কুয়েট শিক্ষার্থী সন্তানকে নিয়ে যেতে খুলনার রুপসা উপজেলা থেকে ক্যাম্পাসে এসেছেন বাবা সবুজ শিকদার। দুটি ব্যাগ ও সরঞ্জাম নিয়ে ভ্যানে চড়ে হল ও ক্যাম্পাস ত্যাগ করছেন বাবা ও ছেলে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল থেকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশই ফিরছেন বাড়ির পথে।
তবে হলত্যাগের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে হলে থাকার সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এখনও হলগুলোতে অবস্থান করছে তারা৷ এসময় এনার্জি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফোর্থ ইয়ারের ছাত্র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, কোন অবস্থাতেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকার ঘোষণা তাদের।
এছাড়া তারা ও আর বলেন, বর্জিত ভিসি কর্তৃক হল ভ্যাকান্টের নোটিশকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা । যারা বর্তমানে হলে অবস্থান করছে তাদেরকে হল ত্যাগ না করার অনুরোধ করা হচ্ছে। এরই সাথে নতুন ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা হল না ছাড়ার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েটের সিন্ডিকেট সভা শেষে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ভিসির বাসভবনে ফের তালা ঝোলাতে গেলে শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে পিছু হটেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষকদের নিয়ে বাসভবনে বৈঠকে বসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। দুপুর ১২টার দিকে ভিসির বাসভবনের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। মাইকে ভেতরে থাকা সবাইকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন তারা। এ সময় শিক্ষকরা বেরিয়ে এসে গেটে তালা দেওয়া কর্মসূচির প্রতিবাদ জানান।
নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল বিকেলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৯তম জরুরি সভায় সকল একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলো কুয়েট প্রশাসন। তবে এখন পর্যন্ত অবস্থানরত শিক্ষার্থীর বা প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ক্যাম্পাসের দুই গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।