পাবনার ঈশ্বরদীতে পরকীয়া প্রেমিক ও প্রেমিকাকে অনৈতিক কাজের জন্য বাড়ির রুম ভাড়া দিয়ে ও মোবাইলে তাদের অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণসহ ৩ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে জেল হাজতে গেলেন মা, ছেলেসহ ৪ জন।
আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহীদ। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে গত শনিবার রাতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গাড়ি সরবরাহকারী মেসার্স আশিক এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী আতিকুর রহমান আতিকের উপজেলার আলহাজ্বমোড়ের বাঁশহাট সংলগ্ন বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, পাবনা আইনজীবি সহকারী ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারপুরের প্রয়াত শহীদুল ইসলাম ওরফে শহিদুল মহরির স্ত্রী মোছা. রেবেকা সুলতানা (৩৮), তার ছেলে মো. শাহরিয়ার ইসলাম রাতুল (২০), শহরের মধ্য অরনখোলা আলহাজ্ব ক্যাম্প এলাকার মৃত মোহাম্মাদ আলীর ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৫), সলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচারা এলাকার মৃত রানা প্রামানিকের ছেলে মো. সজিব হোসেন (২০)। সম্পর্কে তারা পরস্পর মামাতো ও খালাতো ভাই।
উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের আরকান্দি এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মৎস্য খামারি মো. রুহুল আমিন (৩৮) জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার সঙ্গে নাটোরের লালপুর সুন্দরবাড়িয়া এলাকার মো. সালাম মোল্লার স্ত্রী মোছা. রওশনারা বেগমের (৩৫) সঙ্গে পরকীয়া প্রেম চলছিল।
ঘটনার দিন দুপুরে তিনি প্রেমিকা রওশনারার সঙ্গে শারিরিকভাবে মিলিত হওয়ার জন্য পূর্ব পরিচিত দেহ ব্যবসায়ী রেবেকা সুলতানার আলহাজ্ব বাঁশহাটা সংলগ্ন ভাড়া বাড়িতে যান। সেখানে ২ হাজার টাকা দিয়ে দুই ঘন্টার জন্য তিনি একটি রুম ভাড়া নেন। এরপর তারা শারিরিকভাবে মেলামেশা করেন। এই দৃশ্য রেবেকা,তার ছেলেসহ কয়েকজন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এই ভিডিও দেখিয়ে তিন লাখ টাকা দাবী করে আটকিয়ে রাখে মারধর করেন। এরপর বিষয়টি তিনি মোবাইলে তার এক শুভাকাঙ্খিকে জানান তিনি বিকাশে ১০ হাজার আটককারীদের নিকট দেন। পরে তার বড় ভাই মকছেদ আলী বিষয়টি জানতে পেরে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে তাদের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এই ব্যাপারে গ্রেফতারকৃত রেবেকা সুলতানা জানান, জীবিকার তাগিদে তিনি দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি বিভিন্ন জনের চাহিদামত মেয়ে তাদের নিকট পাঠাতেন। ঘটনার দিন রুহুল আমিন ও রওশনারা সময় কাটানো কথা বলে তার রুম ভাড়া নেন। এরপর তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। তার ছেলে, খালার ছেলেসহ কয়েকজন বাসায় এসে রুহুল আমিন ও রওশনারাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে তাদের ভিডিও ধারণসহ আটক করে টাকা দাবী করে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় আনেন।
বাড়ির মালিক মেসার্স আশিক ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আতিকুর রহমান আতিক জানান, তিনি ঢাকায় রয়েছেন। তার বাড়ির তিন তলা ভাড়া নিয়ে রেবেকা সুলতানা গত তিনমাস যাবত অনৈতিক কাজ চালিয়ে আসছিল। গত শনিবার রাতে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম শহীদ জানান, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসাসহ আটক বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল। তারা মেয়ে দিয়ে বিভিন্নজনকে ফঁাসিয়ে ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইলিং করে টাকা আদায় করতো। আটকসহ চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।