পর্যটন নগরী কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের দেশের দীর্ঘতম আলট্রা-ম্যারাথন ‘কোস্টাল আলট্রা ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘সমুদ্র বাঁচাও, পৃথিবী বাঁচাও’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। ‘কোস্টাল আলট্রা বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই ইভেন্টটি আয়োজন করেছে।
আয়োজকদের প্রধান সমন্বয়কারী সুফি মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানিয়েছেন পরিচ্ছন্ন উপকূলের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন ও সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম সংরক্ষণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দায়িত্বশীল পর্যটন চর্চার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই এই ইভেন্টের উদ্দেশ্য। এই ইভেন্টের মাধ্যমে দেশের দৌড়ের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের আলট্রা-ম্যারাথন আয়োজিত হলো।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দীর্ঘ দূরত্বের দৌড় বা আলট্রা-ম্যারাথন আয়োজনের মাধ্যমে দেশে স্পোর্টস ট্যুরিজমের প্রসার, ভ্রমণপিপাসু মানুষকে পরিবেশবান্ধব ভ্রমণে উদ্বুদ্ধকরণ এবং সেই সাথে উপকূলের পরিবেশগত ভারসাম্য ও সমুদ্র তলদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই আলট্রা-ম্যারাথনের আয়োজন করেছে ‘কোস্টাল আলট্রা বাংলাদেশ’।
তিনি জানান আলট্রা-ম্যারাথন বা আলট্রা রান হচ্ছে এক ধরনের দীর্ঘ দূরত্বের দৌড়, যেখানে গতানুগতিক ম্যারাথন দৌড়ের দূরত্ব ৪২.১৯৫ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের দৌড় আয়োজন করা হয়ে থাকে। এর সবচেয়ে ছোট দূরত্বের আলট্রা-ম্যারাথন হচ্ছে ৫০ কিলোমিটার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সারাবিশ্বেই এই আলট্রা-ম্যারাথনের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও প্রায় বিভিন্ন স্থানে আলট্রা-ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশের নানা শহর ও স্থানের ব্র্যান্ডিং এবং সমাজে ইতিবাচক জীবনধারার প্রসারে এ রকম আয়োজন একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দেশের দীর্ঘতম এই আলট্রা-ম্যারাথনে আয়োজক সংগঠনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডপূরণ সাপেক্ষে বাছাইকৃত দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০০ জন দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করেন এবং রেস ট্র্যাকে তাঁদের সামগ্রিক সহায়তার জন্য ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা ৫০ কিলোমিটার, ১০০ কিলোমিটার, ১০০ মাইল এবং ২০০ কিলোমিটার- এই চারটি ক্যাটাগরিতে দৌড়ে অংশ নিয়েছেন। দেশের লম্বা পাল্লার দৌড়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই ২০০ কিলোমিটার দৌড়ের শেষবিন্দুতে সর্বপ্রথমে পা রাখেন এ বি এম সিদ্দিকুল আবেদীন।
এই ইভেন্টের কমিউনিটি পার্টনার হিসেবে ছিলো দেশের অন্যতম পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিকাল ড্রিমার্স’ এবং সাইক্লিং গ্রুপ ‘হেমন্ত রাইডার্স’। চ্যারিটি পার্টনার হিসেবে ছিলো পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলার চাম্পাঝিরি পাড়ার ‘পাওমাং শিশু সদন’ এবং মানবিক মানুষের সংগঠন ‘হাফ ম্যাড হিউম্যান’। এই আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, আরটিএমআই ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।