মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বার্ষিক মূল্যায়নের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ১০টায় আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন গ্রামে বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদ এর আয়োজনে মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পুরস্কার বিতরণ করা হয়
বামসাস কমলগঞ্জ শাখার সভাপতি এল ইবুংহাল সিংহ শ্যামল এর সভাপতিত্বে ও হৈরোল ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও মনিপুরী ভাষার শিক্ষক কনথৌজম শিল্পী ও মণিপুরী লাইব্রেরি এন্ড রিসার্চ সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা কবি অয়েকপম অঞ্জু’র যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্সের সভাপতি এল জয়ন্ত সিংহ,আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর সাবেক সদস্য কে মনীন্দ্র কুমার সিংহ, মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বৃন্দা রানী সিনহা, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহব্বায়ক এম এ ওয়াহিদ রুলু, সাংবাদিক সালাহউদ্দিন শুভ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মণিপুরী ভাষার মতো সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের একটি উন্নত ভাষাকে দ্রুত সাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজস্ব লিপিতে লেখা মণিপুরী ভাষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শিক্ষাদানের কার্যক্রম শুরু করার আহবান জানানো হয়। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মণিপুরী ভাষা ভিন্ন নাম-পরিচয়ে উপস্থাপিত হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়েই মণিপুরী ভাষাকে তার প্রকৃত পরিচয়ে উপস্থাপনের আহবান জানান।
আলোচনা সভা শেষে মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়নের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, মণিপুরী জাতির মাতৃভাষার নাম ‘মণিপুরী ভাষা’। এই ভাষা সেই প্রাচীনকাল থেকেই মণিপুরী জাতির মূলভূমি ভারতের অন্যতম রাজ্য মণিপুরের সরকারি ভাষা এবং এই ভাষায় সেখানে শিক্ষামাধ্যমের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মণিপুরী ভাষা ও সাহিত্যের রয়েছে কয়েক হাজার বৎসরের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ভারতে মণিপুরী ভাষাভাষীদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ১৯৯২ সালের ২০আগস্ট ভারত সরকার সংবিধানের অষ্টম তপসিলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মণিপুরী ভাষাকে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।