× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ঝিনাইদহে কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা

হত্যার দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর বিবৃতি

এম. এইচ রুবেল, ঝিনাইদহ।

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩৪ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পুর্ববাংলার কমিউনিষ্ট পার্টির কথিত সামরিক কমান্ডার হানেফ তার দুই সঙ্গীসহ খুন হয়েছেন। শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষ বন্দুকধারীরা তাদের হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশান ঘাট এলাকার একটি ক্যানালের পাশ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে। তিনজনের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।

পাশে দুইট মটরসাইকেল ও নিহতদের ব্যবহৃত হেলমেট পড়ে ছিল। নিহতদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় মিলেছে। এরা হলেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে শাতাধীক হত্যা মামলার আসামী হানেফ আলী (৫২) ও তার শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন (৩৫)। বাকী একজনের পরিচয় মেলেনি। 

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে ৫জনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, নিহত চরমপন্থি নেতা হানিফ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী ছিলেন। 

হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসি আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে হানেফ এলাকায় ফিরে আসেন এবং মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। 

আ’লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করেন। হাসিনা সরকারের পতন হলে দুধর্ষ হানেফ বিএনপির ছত্রছায়ায় ফিরে আসার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এই ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যে রয়েছে আলমডাঙ্গার কায়েতপাড়ার বিশাল বাওড়। ওই বাওড়ে কোটি টাকার উপরে মাছ ছাড়া আছে। সম্প্রতি মৎস্যজীবী লীগ নেতা পরিচয়ে হানেফ বাওড়ে মাছ ধরা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে এলাকার বিবাদমান একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। 
সেই সুত্র ধরেই হানেফসহ তার দুই সঙ্গীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে গত ৩০ বছরে অর্ধশত মানুষ খুন হয়েছে। হত্যার ধরণ দেখে বোঝা যায় তাদের কৌশলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হরিণাকুন্ডুর সাধরণ মানুষের ভাষ্যমতে সন্ত্রাসী হানেফ কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান, তিওরবিলা গ্রামের লুৎফর রহমান, তাহেরহুদার আব্দুল কাদের ও পোলতাডাঙ্গার ইজাল মাষ্টারসহ শাতাধীক মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করে। এরমধ্যে ইজাল মাষ্টারকে হত্যার পর তার মাথা কেটে উঠানে ফুটবল খেলে। সে সময় বিষয়টি দেশে ব্যবপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। 

এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর জনৈক কালু পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। হোয়াটসঅ্যাপে দাবি করা হয় “এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ,কুষ্টিয়া ,যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। কালু জাসদ গণবাহিনী।

 এদিকে দীর্ঘদিন পর চরমপন্থিদের গুলির লড়াই ও গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে তার দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, একই স্থানে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের শহীদ খা, ত্রিবেনী গ্রামের শাহনেওয়াজ, একই গ্রামের ফারুক, নুরু কানা ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর গ্রামে কটাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা সন্ত্রাসীরা। এই মামলায় ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর কুষ্টিয়র আলী রেজা ওরফে কালু ও কুষ্টিয়া জেলার পিয়ারপুর গ্রামের মহসিন আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। ঝিনাইদহ জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ জাকারিয়া এই রায় প্রদান করেন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.