কথা এমন ছিল না। স্বামীর সাথে সংসার হবে সুখের। সুখও ছিল দিলরুবার। স্বামীর পরকীয়ায় সে সুখে এখন ভাটা পরেছে। সুখেই ভাটা পড়েনি তিন সন্তান নিয়ে ছাড়তে হয়েছে স্বামীর সংসার। মামলা মোকদ্দমায় দিশেহারা এখন সে। একটু সুখ সন্তানের ভবিষৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রাতদিন কাটে তার।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ৬ নং ইউনিয়ন পরিষদের নারায়নপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের মেয়ে দিলরুবা আক্তার। ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী এক লাখ টাকা রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে ত্রিশাল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড উজানপাড়া গ্রামের মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মোঃ রুবেল মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। তাদের সুখের সংসারে ১/তামিম ইকবাল ( ১১) ২/ শেখ সোয়াদ (৪) ৩/ তাহমিনা তানিশা রাফা (২) নামের তিন সন্তান জন্মগ্রহন করে। দ্বিতীয় সন্তান জন্ম গ্রহনের পর থেকে স্বামী রুবেল মিয়া মাদক ও একাধিক পরকীয়ার জড়িয়ে পরে দিলরুবাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
বাপের বাড়ী থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য দিলরুবাকে মারধরের মাত্রা চরম আকার ধারন করলে আব্দুল কাদির তার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ওয়ারিশের জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা মেয়ের স্বামী রুবেল মিয়াকে দেন। কিছুদিন না যেতেই নির্যাতনের মাত্রা আবার বেড়ে যায় এবং তালাকের হুমকি দেন। স্বামী রুবেলের নির্যাতনে দিলরুবাকে একাধিকবার ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বিভিন্ন মেয়েদের সাথে মেলামেশার ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবি দিলরুবা তার স্বামীর মোবাইলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ করার কারনে কাল হয় দিলরুবার।
নিজের সুখের কথা বাদ দিয়ে তিন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নীরবে সব সহ্য করে স্বামীর বাড়ীতে থেকে যায়।
তৃতীয় কন্যা সন্তান তাহমিনা তানিশা রাফার জন্মের পর স্বামী রুবেল ও তার পরিবারের লোক মিলে শারীরিক নির্যাতন করে দুই লাখ টাকা পূনরায় বাপের বাড়ী থেকে আনার জন্য তিন সন্তান সহ দিলরুবা কে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
বিষয়টি নিয়ে গ্রামের একাধিকবার গ্রাম্যশালিসী হয়। কিন্ত গ্রাম্যশালিসে স্বামীর বাড়ীর লোকজন উপস্থিত থাকলেও স্বামী রুবেল গ্রাম্য শালিসে দিলরুবা কে তালাকের হুমকি দেয়।
কোন উপায়ন্তর না পেয়ে দিলরুবা ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট ত্রিশাল আমলী আদালতে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং সিআর নং ৪৪১/২০২৩ ইং। এ মোকদ্দমায় আসামী রুবেলকে দুই বছরে কারাদন্ড এবং পাচঁ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদন্ডে আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। দুই মাস সাজা ভোগের পর আপিলে মুক্তি পেয়ে রাস্তাঘাটে জনসম্মুখে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ মারমুখী আচরণ সহ ডাকাতি ও ৭ ধারা মামলা দিয়ে দিলরুবা ও তার পরিবারকে হয়রানি করেই যাচ্ছে।
দিলরুবা ও তার পরিবার জানায়, তিন সন্তান নিয়ে দেড় বছর ধরে বাবার বাড়ী থাকতেছি। সন্তানের ভরনপোষন থেকে শুরু করে মিথ্যে ডাকাতি মামলাসহ চারটি মামলা পরিচালনা করে আমার কৃষক পিতা এখন সর্বশান্ত।
পিবিআই এর এস আই ডাকাতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খাজেম মাহমুদ জানান, ডাকাতি মামলার বিষয়ে তদন্ত চলছে। অতি দ্রুত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।