বিগত দেড় দশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের যে দুঃশাসন সেটা কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে একটি সংকটে ফেলেছিল। যার ফলে এই গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। এই গণঅভ্যুত্থানের আইনি, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সকল বৈধতাদানের জন্য একটি ঘোষণাপত্র প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
আজ (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর গণঅধিকার পরিষদের জেলা কার্যালয় উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি, প্রাণ দিয়েছি। যারা এতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে। বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রকে বিদেশি তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সেই আওয়ামী লীগের এ দেশে রাজনীতি করার নৈতিক ভিত্তি এবং নৈতিক অধিকার নাই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু একটি নির্বাচনের জন্য এবং একটি ভোটের জন্য এই গণঅভ্যুত্থান হয় নাই। রাষ্ট্র পুনর্গঠন মেরামত এবং সংস্কারের মাধ্যমে গন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তাই আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রসংস্কার অনিবার্য হয়ে উঠেছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা শেষে, সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করবে। সেটার অধিকাংশ বাস্তবায়নের পরে তারা নির্বাচনের পথে হাঁটবেন।
নুর আরো বলেন, গণধিকার পরিষদ বাংলাদেশের ব্যতিক্রমী একটি রাজনৈতিক দল। সেনা সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা সরকারের আনুগত্য কোন দল নয়। গণধিকার পরিষদ আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেয়া একটি দল। পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত রেখে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা, ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। তাই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এসময় তিনি বর্তমান সরকারকে গতিশীল করার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করার আহ্বান জানান। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে এই নির্বাচন সবচেয়ে মডেল এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।
রংপুর জেলা ও মহানগর গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে সভাপতিত্ব করেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শের এ খোদা আসাদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ খাঁন, গণধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও মুখপাত্র মো ফারুক হাসান, জেলা সদস্য সচিব আশিকুর রহমান আশিক।