শীতকালীন আগাম জাতের টমেটো চাষ করে সফল সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামের তরুণ টমেটো চাষীরা। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে নওয়াগাঁও গ্রামের অনেকেই এখন টমেটো চাষ করছেন। কৃষি বিভাগে বলছে, এই সাফল্যে অনেক শিক্ষিত তরুণকে কৃষিমুখী করেছে। নওয়াগাঁও গ্রামের আমনের মাঠে এখন টমেটোর সমারোহ। সারি সারি গাছের মাচায় ঝুলছে লাল টকটকে টমেটো। যা দেখে অনেকের মন জুড়িয়ে যায়।
গত দুই বছর আগে ৪ বিঘা জমিতে যৌথভাবে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ শুরু করেন তরুণ কৃষক জুনেদ,সমুজ ও ওয়ারিছ আলী। শুরুতেই ফলন ভাল হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে জমির পরিমাণ ও কৃষকের সংখ্যা। এখন আমানের মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ হলুদ ফুলের হাতছানি।পাশাপাশি রয়েছে হাইব্রিড জাতের কাঁচামরিচ, শশা ও লাউ। একসময় যদিও এটা শীতকালের দুই মাস ঘরের গৃহিণীরা চাষ করতেন। যেটাকে গ্রামের ভাষায় বলা হতো বিচরা ক্ষেত বা পুতা ক্ষেত।যা শুধু শীতকালে সবজির পারিবারিক চাহিদা মিটানোর জন্য করা হতো। বর্তমানে তা বাণিজ্যিকভাবে শীতকালীন সবজি চাষের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,কৃষকরা বাগান থেকে টমেটো সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য এক জায়গায় এনে জমা করছেন।তাদের কাজে শ্রমিকের পাশাপাশি সহযোগিতা করছেন ঘরের গৃহিণীরাও।
পাইকাররা একেবারে টমেটো জায়গা থেকে এসে ক্রয় করে নিচ্ছেন। বিক্রি করতে কৃষকদের কোন বেগ পেতে হচ্ছে না। টমেটোর সাইজ বুঝে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি ধরে পাইকাররা কিনে নিচ্ছে।কৃষক জুনেদ আহমদ জানান,এবছর টমেটো চারা রোপনের সময় বৃষ্টি থাকায় টমেটো বিক্রিতে একটু দেরি হয়েছে। নতুবা আরো বেশি দামে বিক্রি করতে পারতেন। তার দুই বিঘা জমিতে টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে।খরচ বাদে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা মুনাফা হবে বলে জানান।
এছাড়াও টমেটো চাষী গোলাম রব্বানী,শামীম আহমদ,ওয়ারিশ আলী,মনসব আলী আব্দুল লতিব তারা টমেটো বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তোলে অনেকটা মুনাফা অর্জন করেছেন। বাদবাকি সময়ে টমেটো বিক্রি করে ভালো মুনাফা হবে বলে জানান তারা।কোন কৃষকেরই লসের সম্ভাবনা নেই। নওয়াগাঁও গ্রামের পাকা টমেটো এখন সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সপ্তাহে দুই দিন সালুটিকর বাজার স্হানীয় হাটে টমেটো বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন আগাম টমেটো চাষের সাফল্য উদ্যোগী করেছে নওয়াগাঁও গ্রামের অনেক চাষিকে। টমেটো তুলে ভালোভাবেই সংসার চলছে টমেটো চাষীদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,শীতকালীন টমেটো আবাদ অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।টমেটো চাষে কৃষকদের প্রচুর দক্ষতা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন।
তবে আগাম টমেটো চাষে ভালো মুনাফা থাকায় কৃষকরা আগ্রহী হয়েছে। গোয়ইনঘাট উপজেলায় দিন দিন শীতকালীন সবজির আবাদি জমির পরিমাণ ও কৃষকদের সংখ্যা বাড়ছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানায়।উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদপর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সাথে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন এবং শীতকালীন সবজি আবাদে উপজেলার তরুণ কৃষকরা এগিয়ে আসছেন।