× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আত্মগোপনে থেকেও দাপট দেখাচ্ছে সাবেক এমপি

দেড়বছর ধরে চলছে অবৈধ মাটি-বালু উত্তোলন!

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৩৬ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা

৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে থাকা মৌলভীবাজার-৩ আসনের আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের মালিকানাধীন অলিলা গ্লাস ফেক্টরির দ্বিতীয় কারখানা স্থাপনে জমি ভরাটে সংশ্লিষ্ট সরকারী দফতরের অনুমতি ছাড়াই অভেধভাবে বালু ও মাটি কাটা হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে আশপাশের কৃষি জমি আর পাহাড়ী ছড়া, এতে ক্ষতি হচ্ছে আশপাশের পরিবেশের। অন্তত দেড় বছর আগে থেকে ওই এলাকায় তার দ্বিতীয় কারখানা স্থাপনে কারখানার অভ্যন্তরে অনুমতি ছাড়াই অবৈধ মাটি আর বালু ফেলা হচ্ছে। যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে।

বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় এলাকার মানুষ কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপটে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ মুখ না খুললেও এখন সাহস করে কথা বলতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। বালু ও মাটিবাহী ড্রামট্রাক কয়েকবার আটকানোর চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হন বলে জানা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুনবীর ইউনয়নের মধ্যদিয়ে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের একপাশে রয়েছে অলিলা গ্লাস ফেক্টরির মূল কারখানা। সড়কের উল্টো পাশে সাতগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম লৈয়ারকুল এলাকায় বিশাল এলাকা জুড়ে দ্বিতীয় কারখানা নির্মানে তৈরি হচ্ছে বড় বড় অবকাটামো। কৃষি জমিতে স্থাপন করা কারখানার জমি ভরাটে সেখানে একের পর এক দানব আকৃতির ড্রামট্রাক দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বালু আর মাটি। প্রতিটি ড্রামট্রাকে অন্তত ৭ শ থেকে ৮শ ফুট বালুর ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। কিছুটা দূরের কৃষি জমি ও সরকারী ছড়ার পাশ থেকে বিশাল আকৃতির এক্সেভেটর দিয়ে চলছে মাটি কাটার কাজ।

জমির মালিকানা নিজের হলেও বালু ও মাটি কাটতে প্রয়োজন হয় সরকারী অনুমতির। তবে এসব মাটি আর বালু কাটতে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় ভুমি অফিস সহ কোন দফতর থেকেই অনুমতি নেয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন একদিকে শিল্পপতি,সাবেক এমপি আর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রভাব দেখিয়ে এলাকার মানুষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শুরু করেন অবাদে মাটি আর বালু কাটার কাজ। বিরামহীন মাটি কাটার ফলে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ী ছড়ার পাড়ের বেশ কিছু জায়গা ধসে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আশপাশের কৃষি জমিও।

স্থানীয় বাসিন্দা রুশমত আরী বলেন, তারা আমার ঘরের সীমানা পর্যন্ত মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এখন বর্ষা আসলেই পানির স্রোতে বাড়িঘর ছড়ায় নিয়ে যাবে। কারন মাটি কেটে অনেক গহীন গর্ত তৈরি করা হয়েছে। তারা ক্ষমতার বলে এসব করেছে,এলাকার কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করেনি।  

এবিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি),সালাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন অনুমোদন দেয়া হয়নি। নির্ধারিত জায়গা ছাড়া মাটি কাটা কিংবা বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। এটা সে যত বড় শক্তিশালী কিংবা বড় মাপের মানুষই হোকনা কেন, কারও পক্ষে নির্ধারিত জায়গা থেকে অথবা লিজ না নিয়ে নির্ধারিত তফসিলভুক্ত জায়গা থেকে ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে বালু তোলার কোন সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টা দেখে দ্রæতই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।  

সরেজমিন অলিলা গ্লাস ফেক্টরির দ্বিতীয় কারখানা প্রকল্প এলাকায় গিয়ে পরিচয় দিয়ে ভিতরে যেতে চাইলে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি প্রথমে বাধা দিলেও পরে প্রবেশ করতে দেন। ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, ড্রামট্রাক ভরে একের পর একর বালু ও মাটি ফেলা হচ্ছে অভ্যন্তরে। তবে এ বিষয়ে সেখানকার দ্বায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি কোন কথা বলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, এ বিষয়ে তার কথা বলার কোন দ্বায়িত্ব নেই।

অবৈধ মাটি আর বালু কাটার বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনে বলতে পারবো,যদি তারা অবৈধভাবে মাটি কাটে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর জাতীয় পরিষদ সদস্য আ স ম সালেহ সোহেল বলেন, আমরা যেটি মনে করছি কৃষি জমির স্থর পরিবর্তন করে যেটি শিল্প স্থাপন করা হচ্ছে সেটি শিল্প এবং পরিবেশের জন্য কখনোই সুখকর হবেনা। আমরা মনে করি এখানে যে অবৈধ বালু উত্তোলন হচ্ছে ,অপব্যবহার হচ্ছে,কৃষি জমি সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে এখানে পরিবেশ বিপর্যয় ঘচবে। আমরা মনে করি যত্রতত্র স্থানে শিল্প স্থাপন না করে শিল্প স্থাপনের উপযোগী জায়গায় স্থাপন করা হয় তাহলে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক মো: সামছুদ্দিন আহমদ বলেন,শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অলিলা গ্রুপের ইন্ডাস্ট্রি আমরা দেখেছি। আমি জানিনা এখানে এগুলো কীভাবে হচ্ছে। আমার জানা মতে এখানে কৃষক ভাইয়েরা দুই থেকে তিনটা ফসল করে। কৃষক ভাইয়েরা এভাবে আপন জমি হারাচ্ছে আর আবাদি জমির পরিমান দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। এতে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত বলে আমি আশা করছি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.