মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও আবর্জনার স্তূপ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ ১লা ডিসেম্বর সকালে ময়লার ভাগাড় দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়ে তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সহস্রাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে এই ময়লার ভাগাড়টি অপসারণের জন্য। কিন্ত দীর্ঘদিন থেকে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই এখন আমাদের একটাই দাবি এই ময়লার স্তূপ কে স্থানান্তর করতেই হবে। কারন এই ময়লার দুর্গন্ধের জন্য শারীরিকভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি, সেই সাথে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে, আমাদের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ প্রাচীন একটি বিদ্যাপিঠ, এখানে বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন, সেই সাথে একটি মাদ্রাসা এবং একটি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে, যেখানে অসংখ্য ছোট শিশু শিক্ষার্থীও রয়েছে। কিন্ত এখানকার পরিবেশ খুবই দুঃখজনক, এই ময়লার কারনে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ও হচ্ছে।
জানা যায়, পৌরসভার এ ময়লার ভাগাড়টি থেকে তীব্র দুর্গন্ধে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ভাগাড় থেকে মশা ও মাছির উপদ্রবে লোকজনের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ফলে এখান থেকে ভাগাড়টি স্থানান্তরের দাবিতে ২০১৭ সালে তীব্র আন্দোলন করেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বার্ডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া সফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তারা ময়লার ভাগাড়ের সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে ময়লা ফেলা বন্ধ করে দেন। পরে সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপি আন্দোলনকারীদের ৬ মাসের মধ্যে এর সমাধানন করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করা হলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করে এবং পরে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ২০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলো কিন্তু তাদের কথা না রাখায় আজ ০১ ডিসেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার মো. ইসরাইল হোসেন জানান,শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসেছিল। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গলকে বলেছিলাম সরকারি খতিয়ানের কোন জায়গাতে ময়লা ফেলা যায় কিনা তার খোঁজ খবর নিতে। কিন্তু তিনি আজ (রোববার) বদলি হয়ে চলে যাওয়াতে নতুন ইউএনওকে আমি বলে দিচ্ছি দ্রুত বিকল্প উদ্যোগ নেয়ার জন্য।