আগামী ২৯ নভেম্বর রাজশাহী সুগার মিলে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। এই বছর আখের দাম প্রতিমণে ২০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া মিল জোন এলাকায় বেড়েছে আখের উৎপাদন বলে জানায় মিল সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী সুগার মিলস সূত্রে জানা গেছে, এবছর মিলে ৫৫ হাজার টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে আখ মাড়াই মৌসুমে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার টন। এবছর মিল জোন এলাকায় আখের চাষ বেড়েছে। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ প্রতি মণ আখের দাম বাড়িয়েছে ২০ টাকা। গত বছর প্রতিমণ আখ কেনা হয়েছিল ২২০ টাকা মণ দরে। এবছর ২০ টাকা বাড়িয়ে ২৪০ টাকা মণ দরে আখ কেনা হবে। এছাড়া রাজশাহী সুগার মিলে গত বছরের ৪৪৩ টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় রয়েছে। এই চিনিগুলো সরকারিভাবে বিক্রি করা হয়।
রাজশাহী সুগার মিলে রয়েছে মোট নয়টি সাব জোন। এর মধ্যে পশ্চিমে কাশিয়াডাঙ্গা, নওদাপাড়া, মিলস গেট ‘ক’ ও মিলস গেট ‘খ’ জোন। পুঠিয়া, নন্দনগাছী, সরদহ, চারঘাট ও আড়ানীতে উৎপাদন বেশ ভালো। সেক্ষেত্রে মিলের মোট চাহিদা এ পাঁচটি সাব জোন থেকেই পূরণ করা হয়।
না গেছে, ১৫ অক্টোবর ২০২৪-২৫ মাড়াই মৌসুমের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বয়লার ফায়ারিং, ওয়াটার ট্রায়াল, মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন সম্পর্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী ২৯ নভেম্বর আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হবে। এরমধ্যে গত ৮ নভেম্বর বয়লার স্লো ফায়ারিং করা হয়। এছাড়া আগামী ২৪-২৫ নভেম্বর ওয়াটার ট্রায়াল করা হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৯ নভেম্বর রাজশাহী সুগার মিলে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই বছর কৃষক পর্যায়ে আখের দাম প্রতিমণে ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর আখের উৎপাদন বেড়েছে। আশা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে। মিলে অবিক্রিত চিনি রয়েছে। সরকার যেভাবে চাই সেভাবে বিক্রি করা হয় চিনিগুলো। মিলে বর্তমানে এক মণ আখ মাড়াই করলে ২ কেজি ৪০০ গ্রাম চিনি উৎপাদন হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহী চিনি কল লিমিটেড স্থানীয়দের কাছে হারিয়ান চিনি কল নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি চিনি কল। ১৯৬২ সালে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৯৬৫ সালে সমাপ্ত হয় এবং ১৯৬৫-৬৬ সাল থেকে এখানে চিনি উৎপাদন শুরু হয়। স্বাধীনতা লাভের পর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। রাজশাহীর পবা উপজেলাধীন হরিয়ান এলাকায় চিনি উৎপাদনকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর নিয়ন্ত্রণাধীন।