রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে সচেতন রাজশাহীবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) পাসপোর্ট অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘন্টাব্যাপী চলা কর্মসূচিতে রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নানা অনিময়-দুর্নীতি তুলে ধরেন বক্তারা।
মাবববন্ধনে সাধারণ মানুষের সাথে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, আবু সাইদসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারি অনেক অফিসে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হলেও রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসে এখনো ঘুষছাড়া কোনো ফাইলের অগ্রগতি হয় না। দালাল না ধরলে পাসপোর্ট হয় না। দালালদের মাধ্যমে টাকা না দিলে কারও পাসপোর্ট হয় না; উপরন্তু নানা অজুহাতে মাসের পর মাস হয়রানি করা হয়। মানুষকে জিম্মি করে নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আদায় করা হয়। এর পেছনে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরতদের সক্রিয় একটি চক্র জড়িত। তারা কৌশলে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করে থাকে বলেও অভিযোগ অনেক।
বিশেষ করে যেসকল সেবাগ্রহীতা অন্য অঞ্চল থেকে রাজশাহীতে আসে তাদের ভোগান্তি আকাশসম। তাই বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ দালালদের কাছে ধরনা ধরেন। দালালরা সেই সুযোগে পাসপোর্ট প্রতি অতিরিক্ত আরো দুই-তিন হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন এ পাসপোর্ট অফিসের দালালদের মাধ্যমে অন্তত তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে থাকে বলেও অভিযোগ আছে। ঘুষ না দিলে এ অফিসে সাধারণ মানুষ পাসপোর্ট করতে পারেন না। তাদের দফায় দফায় নানা ভুল ধরে ঘুরাতে থাকেন অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগীরা এনিয়ে উপপরিচালকের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে তিনি অসদাচরণ করেন। নিজের দাম্ভিকতা দেখিয়ে প্রশাসনের ভয় দেখান বলেও অভিযোগ অনেক। নানাবিধ অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে অফিসের উপপরিচালকের অপসারণের দাবিতে রাজশাহী নগরীর স্থানীয়রা রাস্তায় নেমেছেন বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারিরা।
মানববন্ধন শেষে উপপরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করার পর আন্দোলনকারিদের সাথে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। হট্টগোল এমন পর্যায়ে যায় যে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশ সদস্যদেরকে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারিরা প্রতিবাদ লিপি দিয়ে বেরিয়ে আসেন।
এবিষয়ে রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক রোজি খন্দকার বলেন, ’রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসে কোনো অনিয়ম হয় না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নাই। আর বাইরে কেউ কাউকে টাকা দিলে আমাদের কিছু করার নাই।’