রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরে ভুয়া ডাক্তার ও ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণহানির ঘটনার সাথে বেশ পরিচিত স্থানীয়রা। অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ভুয়া ডাক্তার নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গিয়ে প্রাণনাশ ও মারধরের স্বীকার হয়েছে পুঠিয়ার বেশকয়েকজন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার গণমাধ্যমকর্মী।
নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে ওই ঘটনায় পুঠিয়া থানায় একটি জেনারেল ডাইরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রকিবুল হাসান ও আবু হাসাদ কামাল নামের দুজন গণমাধ্যমকর্মী রোগী সেজে চিকিৎসা সেবা নিতে যায় সাথী ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টারে।
গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া তথ্য মতে, বুধবার দুপুরে কয়েকজন সাংবাদিক ঐক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসকের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় জানতে চায়। ঐসময় একজন পুরুষ ও একজন নারী রোগীকে ভূয়া ডাক্তার মিন্টু চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রশ্ন করা হলে, তিনি ডাক্তার না বলে সাংবাদিক ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের কাছে স্বীকার করলেও নিজেকে একজন ডাক্তারের সহকারী ও পরামর্শক হিসেবে পরিচয় দেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.কে.এম নূর হোসেন নির্ঝর ও পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে ডা: আলামিন সরকার উপস্থিত হয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করে সাথী ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টারের মালিক ও পরিচালক মিন্টু কে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। ওই ঘটনার পর থেকে সাংবাদিকদের মিথ্যে মামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযুক্তরা।
সাথী ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টারের মালিক ও পরিচালক মিন্টু এবং সেখানে রিসিপশনে কর্মরত আবু সায়েম আব্দুল্লাহ্ ও ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় একটি জিডি করে ভুক্তভোগী গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন বলেন, কয়েকজন সাংবাদিকরা থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, ‘পুঠিয়া পৌর সদরে কৃষ্ণপুর এলাকায় সরফরাজ মিন্টু নামের এক ব্যক্তি চিকিৎসক পরিচয়ে সেবা দিয়ে আসছিলেন। যদিও তার চিকিৎসা বিষয়ে কোনও ডিগ্রি নেই। এছাড়া রোগী দেখার জন্য ২ শত টাকা করে নিতেন। এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে তিনি এ ধরনের কাজ করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, সিভিল সার্জন রাজশাহী তিনি বলেন, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে বেশ কিছু ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টি আমি জানিনা তবে খোঁজখবর নিয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।