রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা ও আসাদুজ্জামান বাবলুসহ আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির ৩৯ জন নেতাকর্মীর নামে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় ২৫০-২৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাধা ও বিএনপি পার্টি অফিসে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, ছিনতাই এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল (১৮ নভেম্বর) গঙ্গাচড়া মডেল থানায় জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল বাবু এ মামলাটি করেন।
মামলার বিষয়টি আজ (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেন গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক এমপি মশিউর রহমান রাঙ্গার ছেলে জিতু, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুর ইসলাম মমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল মতিন অভি, গজঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম লেবু, মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, যুবলীগ নেতা আতাউর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাজালাল প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা ১৪ দলীয় মহাজোটের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। বিগত সরকারের ১৫ বছর সময়ে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডসহ রাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা দান, বাক্স্বাধীনতা খর্ব, দলীয় কার্যালয়ে হামলা, নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানিসহ প্রকাশ্যে জীবননাশের হুমকি এবং নানাভাবে দমনপীড়নমূলক অন্যায় অত্যাচার করেছে। এ অবস্থায় গত ১৯ জুলাই ডাকবাংলো সংলগ্ন বিএনপি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় আসামিরাসহ প্রায় ২৫০-২৬০ হামলা চালায় এবং লুটপাট ছিনতাই করে।
এদিকে এই মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে রংপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক গাজী মোহাম্মাদ মাজহারুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লিখেন, '৮ সেপ্টেম্বর গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপি পার্টি অফিস ভাঙা মামলা হয়েছে অথচ আমরা কিছুই জানলাম না। দোষী মানুষকে বাদ দিয়ে কিছু নির্দোষ মানুষকে আসামি করা হলো কেন সেটাও বুঝলাম না, সেদিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি করা হলো না কেন?'
এ বিষয়ে মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল বাবু বলেন, 'মামলাটি নিয়ে আমি নিজেও চিন্তিত। আমি চাই না কোন নিরপরাধ মানুষ বিনা কারণে মামলায় পড়ে হয়রানির শিকার হোক। আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটা সময় হলে সবাই বুঝতে পারবে।'