কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পিডিবির লাইনে মেরামতের কাজ করতে গিয়ে শাহিনুর মিয়া (৪০) নামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে। এ সময় আহত হয়েছেন ময়মনসিংহ জেলার ইশ্বরগঞ্জ এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো.শহিদ (৪৫)। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৯টার দিকে শহরের নিউ টাউন এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত যুবক যশোর জেলার কেশবপুর থানার মন্ডারখোলার টিটা বাজিতপুর এলাকার হযরত আলীর ছেলে শাহীনুর।

জানা যায়, ভৈরব শহরের ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংলগ্ন নিউ টাউন এলাকায় ভৈরব বাজার-৩  বৈদ্যুতিক লাইনের মেরামত কাজ চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয় লাইনম্যান শাহিনুর ও শহিদ মিয়া। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শাহিনুরকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত শহিদ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

নিহতের ভাগ্নে রাজু মিয়া বলেন, প্রতিদিনের মত আজ সকালেও মামাকে সাথে নিয়ে নিউটাউন এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনের মেরামতের কাজের জন্য যাই। এ সময় পিডিবির বৈদ্যুতিক অফিসের সাথে কথা বলে মেইন লাইন বন্ধ করে মামা বৈদ্যুতিক খুটিতে উঠেন। কিন্ত খুঁটিতে উঠা মাত্রই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার মামাসহ দুজন মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মামা মারা যায়। বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীদের খামখেয়ালির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করছেন। 

লাইনম্যন মো: স্বপন গাজি বলেন, আমরা নিউটাউন এলাকায় বিদ্যুতের লাইনে মেরামতের কাজে ঠিকাদারের কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করি। ঐখানে পাশাপাশি তিনটি লাইন ছিল। বন্ধ লাইনের কাজ করার পর শাহিনুরের হাতে থাকা তারটি অসতর্কবশত ছিটকে পার্শ্ববর্তী সচল লাইনের তারে স্পর্শ করলে তাতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.রেজিনা পারভিন বলেন, সকালের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাদের মধ্য একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরেকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। 

ভৈরব পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, শহরের ভৈরব বাজার এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে কদিন যাবত বৈদ্যুতিক লাইনের মেরামত কাজ চলছিলো। আজ সকালের দিকে লাইনের কাজ করতে গিয়ে লাইনম্যানের হাতের তার ছুটে পাশের লাইনে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আরেকজন আহত হয়েছে। কাজ করার সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে তার দাবি। 

এবিষয়ে ভৈরব থানার এসআই মো.মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে একজন বৈদ্যুতিক শ্রমিকের মরদেহ পেয়েছি। সুরতাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হবে। পরবর্তী অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।