লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের শহর কসবা গ্রামের লোকজনের জন্য আতঙ্কের নাম নবী। সে একই এলাকার মিঝি বাড়ির মৃত সাইদ উল্যার ছেলে। স্থানীয় লোকজনের উপর হামলা ও নির্য়াতনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আইনের আশ্রয় নেওয়া তো দূরের কথা তার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না ভুক্তভোগীরা।
বিগত সরকারের আমলে তার স্ত্রীর ৪ ভাই আওয়ামীলীগ করার সুবাদে তাদের দাপটে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। গত কয়েকমাস থেকে পুরোপুরি বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি সমর্থিত নবী ও তার বাহিনীর লোকজন।
নবীর অত্যাচারে এবং প্রাণহানীর হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কফিল ও আনোয়ারা নামে এক দম্পতি। নবী বাহিনীর কাছে পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা৷ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের। মামলা কিংবা আইনের দারস্থ হলে হত্যারও হুমকি দিচ্ছে এ দম্পতিকে।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম জানায়, তাদের বাড়ির এক মেয়ের সাথে নবীর ভাতিজা ফাহাদকে গত মঙ্গলবার রাতে অসামাজিক অবস্থায় দেখে ফেলে তার স্বামী কফিল। বিষয়টি সে স্থানীয় লোকজনকে জানালে ফাহাদ প্রথমে কফিলকে মারধর করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। এরপর ওইরাতে ফাহাদের চাচা নবীর নেতৃত্বে তার ভাই নুরুল্যা ও আবুসহ দলবল নিয়ে এসে কফিলের বাড়িতে হামলা চালায়। ভয়ে কফিল বাগানে লুকিয়ে পড়ে৷ রাতেই সে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে পুলিশের গাড়িতে করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসা নেয় কফিল।
আনোয়ারা বলেন, আমরা এখন বাড়িতে যেতে পারি না নবী ও তার সাঙ্গ পাঙ্গদের ভয়ে। তারা আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। বাড়িতে গেলে মারধর করবে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেবে।
আইনের আশ্রয় নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে আতঙ্কগ্রস্ত এ নারী বলেন, মামলা করলে আমাদের জবাই করে দেবে। এখন তো প্রাণ নিয়ে বেঁচে আছি। পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কিন্তু মামলা করলে বাঁচতে দেবে না। আমরা নবীর বাহিনীর কাছে অসহায়। সে এলাকায় বহু ধরনের আকাম-কুকাম করে। কেউ তার কিছু করতে পারে না। তাই ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না।
একই কথা জানিয়ে আনোয়ারা বেগমের স্বামী কফিল উদ্দিন বলেন, আমরা একেবারে অসহায়। অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছি। আমার কারণে নাকি সমাজে তাদের ইজ্জত নষ্ট হচ্ছে। এজন্য আমার উপর ক্ষিপ্ত তারা। তাদের ভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মামলা করার মতো সাহস নেই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নবীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মুন্নাফ বলেন, জরুরী সেবায় কল পেয়ে এক নারীসহ দুজনকে পুলিশ উদ্ধার করে। ভুক্তভোগী পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।