কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রী, মৌলভীবাজার-৪ আসনের (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সাতবারের সাবেক উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ গ্রেফতারের সংবাদে শ্রীমঙ্গল শহরে আনন্দ মিছিল বের হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন চত্বর থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের স্টেশন রোড, হবিগঞ্জ রোডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে এসে
সমাবেশে মিলিত হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মো. তাজ উদ্দিন তাজুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মিছিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, দলের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
মিছিলে 'ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই-ভোট চোরা শহীদের ফাঁসি চাই', এই মুহুর্তে খবর এলো শহীদ চোরা ধরা খেলো,' ইত্যাদি শ্লোগানে মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বিএনপি, অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্যে বলেন, পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ বিগত ২৮ বছর ধরে শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জে নানা ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ প্রদানকারী। বিগত দুই যুগের বেশি সময় এমপি ও কৃষি মন্ত্রী থাকার সুবাদে
বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। অবৈধ হাসিনা সরকারের আমলে তিনি ভোট চুরির মাধ্যমে বারবার এমপি নির্বাচিত হয়ে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ক্ষমতার দাপটে তার নির্দেশে বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল-জুলুমসহ দিনের পর দিন হয়রানি করা হয়েছে। উন্নয়নের নামে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট করেছেন। তার এসব দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জন ও হত্যা মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১য় ঢাকার উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে সাবেক কৃৃষিমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় তিনটি হত্যা মামলা, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারে হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর, ককটেল বিষ্ফোরক আইনে চারটি মামলাসহ আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের সময় তার বাসায় বিপুল পরিমাণ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে। জব্দ টাকার পরিমাণ প্রায় তিন কোটি।