বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় “দানা” বাংলাদেশের সমতলে প্রবেশ করার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ। তবুও উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, স্বেচ্ছাসেবক ও শুকনো খাবার।
বজলুর রশিদ আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় 'দানা' বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। দেশের সমতলে এটি প্রবেশ করার কোনো আশঙ্কা নেই। তবে এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে স্থানীয় সতর্ক সংকেত ০৩ (তিন) নম্বর দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারী (৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিমি এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান জানান, “ঘূর্ণিঝড় 'দানা' মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দিতে জেলার ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে দুই লাখ ৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে আড়াই হাজারের বেশি রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সাথে শুকনা খাবার নগদ টাকা ও চাল মজুদ করেছে জেলা প্রশাসন। মোংলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম গঠন, ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত, কোস্ট গার্ডকে প্রস্তুত, শুকনা খাবার প্রস্তুত ও ১০৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। একই সাথে সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান ভূইয়া বলেন, বন্দরে অবস্থানরত ২টি জাহাজে চীন থেকে আমদানি হওয়া সার খালাস বন্ধ রয়েছে। এছাড়া আরও ৫টি জাহাজে বৃষ্টির কারণে পণ্য খালাস ব্যাহত হচ্ছে। পণ্য খালাস বন্ধ থাকা জাহাজ ২টি হচ্ছে , চীনা পতাকাবাহী 'গ্রেড বিউটি' এবং হংকং পতাকাবাহী 'হুয়া ইয়ং মেই গুই'।