রংপুরে কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারিতে আনন্দ মিছিল করেছে। হৈ হৈ রৈ রৈ ছাত্রলীগ গেলি কৈ, এই মুহুর্তে খবর এলো ছাত্রলীগ মারা গেলো, একটা একটা লীগ ধর ধইরা ধইরা জবাই কর, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় এমন স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পার্কের মোড় থেকে শুরু হয়ে চকবাজার ঘুরে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরপরই ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ থেকে একটি মিছিল বেরিয়ে লালবাগ রেলগেট প্রদক্ষিণ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকে গিয়ে মিছিলশেষে মিষ্টি বিতরণ করে।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কারণ, ছাত্রলীগ সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা হত্যাকাণ্ড, গুম, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতন, টেন্ডারবাজি এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ছিল।’
তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ‘আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করা উচিত।’ শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘যারা আগে ছাত্রলীগের সাথে ছিলেন, আমরা তাদের চিনি। যদি তারা অন্য কোনো সংগঠনে যুক্ত হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, গণরুম কেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল। এসব ঘটনার প্রমাণ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং আদালতে কিছু অপরাধের প্রমাণিত তথ্য রয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়, যার ফলে বহু নিরপরাধ মানুষ নিহত হয় এবং অনেকের জীবন বিপন্ন হয়।
সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।