জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও আলেয়া আজম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ সহ অহরহ অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ও মানববন্ধন হলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বহিষ্কারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা৷ লিখিত অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে শোকজ করা হয়েছে বলে আজ (৯ অক্টোবর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. আলমগীর জানিয়েছেন৷
জানা যায়, নীতিমাল লঙ্গন করে অবৈধ ভাবে ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন হারুন অর রশিদ। যোগদানের পর থেকেই তিনি বিদ্যালয় নানা অনিয়ম এর মধ্য দিয়ে পরিচালনা করে আসছে৷ দীর্ঘদিন যাবৎ বহাল তবিয়তে বিদ্যালয়ে পকেট কমিটি করণ, নিয়োগ বাণিজ্য,বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধর্মীয় শিক্ষককে বরখাস্ত ,বিদ্যালয়ে টিন আত্মসাৎ,অবৈধ কমিটি গঠন,ইংরেজি শিক্ষককে বরখাস্ত ,৪জন শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া ,বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সরকারি অনুদান আত্মসাৎ ও উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের বেতন গ্রহণ ও টিউশন ফি আত্মসাৎ করা সহ অসংখ্য অনিয়ম আর দুর্নীতি অভিযোগ থাকলেও একতরফা রাজত্ব চালিয়ে আসছে প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ। এসব কর্মকাণ্ডের হিসাব আর তদন্ত করার মত কেউ নেই বলে দীর্ঘদিন যাবত সীমাহীন দুর্নীতি আর অনিয়ন করে আসছে হারুনুর রশিদ। এদিকে গত ২৫ আগস্ট প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ এর বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-ছাত্রীর ৯ ম শ্রেণী শিক্ষার্থী মাহবুব খান, হাবিব ও ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেহেদী, রাইসা, ইরাত উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জামালপুর জেলা প্রশাসক, জামালপুর জেলা শিক্ষা অফিসার, জামালপুর সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার, মেলান্দহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জামালপুর প্রেস ক্লাবকে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে৷
কথা হলে অভিযোগ কারীরা জানান, হারুন অর রশিদের অনিয়ম ও আত্মসাৎ দুর্নীতির মূল কারণ তিনি দীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থেকে এসব কর্মকাণ্ড করে আসছেন। প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের অপসারণ সহ বিচার দাবি করে তারা৷
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে বুধবার ১২ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত একাধিকবার প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদকে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মেলান্দহ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা
মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ফুলকোচা আলেয়া আজম উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য এ পর্যন্ত কত টাকা বরাদ্দ ছিল দেখে জানাতে হবে৷
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদুর রহমান ভুইয়া জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত রয়েছি৷ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় তদন্ত করছেন৷
বুধবার দুপুরে কথা হলে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. আলমগীর জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এর প্রেক্ষিতে শোকজ করা হয়েছে৷ শোকজের জবাব যদি সন্তোষজনক না হয় তাহলে তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক বিধি মোতাবেক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।