নির্দেশ অমান্য করে মন্সীগঞ্জের লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি উপজেলার ডহরি-তালতলা খালে বালবাহী বাল্কহেড চলছে দেদারছে। পাশাপাশি অবৈধ ড্রেজার দিয়ে চলছে কষি জমি ভরাটের রমরমা বাণিজ্য। ডহরি থেকে তালতলা পর্যন্ত খালের দুই পারে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি ড্রেজারের মাধ্যমে বাল্কহেড থেকে বালু টেনে ভরাটের মাধ্যমে কষি জমিসহ সরকারি খাসজমি খাল, জলাশয় ও পুকুর ভরাটের মাধ্যমে গিলে খাচ্ছে উপজেলার মৎস্য ও শস্য ভান্ডার।
স্থানীয়রা বলেন, ড্রেজার দিয়ে ভরাটের কারণে বর্তমানে চাষাবাদের জমি কমছে। হুমকির মখে পড়েছে চাষাবাদ, মৎস্য ও শস্য ভান্ডার এবং পরিবেশও তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছক এক ব্যক্তি জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা না হওয়ায় ড্রেজার বাণিজ্য বেড়ে গেছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লোকজন মিলে এসব ড্রেজার বসিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লৌহজং উপজেলা বিএনপির এক নেতার ইন্ধনে এসব বাল্কহেড ও ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক সিন্ডিকেড। ডহরি-তালতলা খালে ড্রেজার বাণিজ্য চালাচ্ছে ইমরান বাছার, সুমন মোল্লা, দেলোয়ার বেপারী, টিটু শেখ, রাজন মুন্সী, জুলহাস শেখ, আনোয়ার, মামুন, অহিদ হাওলাদার, সুজন সিকদার, সুমন হাওলাদার, রাজিবসহ একাধিক সিন্ডিকেড।
এ বিষয়ে বিএনপির সদস্য সচিব হাবিবর রহমান চাকলাদার আপু মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড্রেজার বন্ধ করতে ইউএনও ও ওসি সাহেবকে বলেছি। আমি বলার পর অভিযান চালিয়ে আমার ইউনিয়নের একজনকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডহরি-তালতলা খালের দই বালিগাঁও সেতু সংলগ্ন ৪টি ইসলামপুর ১টি, বাসদিয়া ১টি, চাষি বালিগাঁও ১টি, খেতেরপাড়া গাংচিল মাঠের পাশে ১টি, বনসেমন্ত ১টি, ডহরি-নওপাড়া গ্রামে কদ অফিসের পাশে ২টি এবং সুবচনী ও তালতলা একাধিক খালের পাড়ে আনলোড ড্রেজার বসিয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাল্কহেড দিয়ে বালু এনে তা ড্রেজারের মাধ্যমে পানির স্পিড দিয়ে ও পাম্প করে এলাকার বিভিন্ন কষি জমিতে পাইপের মাধ্যমে পাঠাচ্ছে। এছাড়া ড্রেজারের বিকট আওয়াজে অতিষ্ট এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীরা জানান, ড্রেজারব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কিছু বলা যায় না। রাতদিন এই ড্রেজার মেশিনের শব্দে বাড়িতে ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে। খালে রাতদিন একাধিক বাল্কহেড চলাচলের কারণে খালের পাশের বাড়িগুলো ভেঙে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরবিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হউক। আর এসব ড্রেজার ব্যবসা বন্ধ করে কৃষি জমিগুলো রক্ষা করুক।
এ বিষয় লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কায়েসর রহমান সাংবাদিকদের কে জানান, কলমা ও গাঁওদিয়া এলাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধভাবে ড্রেজার ব্যবসার দায়ে চার ড্রেজার মালিকেকে নগদ তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডহরি-তালতলা খালে ড্রেজারে বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে।