× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রংপুর অঞ্চলে নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, তিস্তার ৪৪ জলকপাট খোলা

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৪ পিএম

ছবিঃ কামরুল হাসান টিটূ।

অসহনীয় গরমের পর টানা দুই দিনের স্বস্তির বৃষ্টিতে জনজীবনে ফিরেছে প্রশান্তির আমেজ। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর টানা মাঝারি ধরনের বর্ষণ হয়েছে। শুধুমাত্র রংপুরেই গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ দশমিক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 এদিকে হালকা থেকে মাঝারি, আবার কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণে দুই দিন ধরে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রংপুর বিভাগের তিস্তা ধরলা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। এসব নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার শনিবার দুদিন পর্যন্ত রংপুর বিভাগ তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। এরফলে তিস্তা, ধরলা দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল আগামী দুই দিন পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দিন পর্যন্ত নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী দুইদিন পর্যন্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্ক-সীমায় প্রবাহিত হতে পারে। এসব জেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অপরদিকে আগামী তিন দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

 অন্যদিকে রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানিসমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। এবং পরবর্তী দিন পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ছয়টায় একই পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়।

 এদিন সকাল টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

 এছাড়াও সকাল ৯টার দিকে কুড়িগ্রামের ব্রক্ষ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ২০ দশমিক শূন্য চার সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার), দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২৬ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার), ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ২২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৬ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার), গাইবান্ধার যমুনা নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৫ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ১৯ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার), ঘাঘট নদের গাইবান্ধা পয়েন্টে ১৭ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২১ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার) পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। সূত্র বলছে, রংপুর বিভাগের কোনো নদ-নদীতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না।

 এদিকে প্রতিদিনের বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা জেলার সকল নদ-নদীর পানি পাশাপাশি বিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। একই সঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।

এদিকে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ভাঙনে প্রতিবছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর জেলায় ১০২ দশমিক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রংপুর বিভাগসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুরের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। 


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.