ফরিদপুরের সালথায় স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় প্রবাসী অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে ঐ গৃহবধূর গর্ভপাত হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া এলাকায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় মারধরের এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ঐ গৃহবধু কাজল বেগম (৩৫) দুবাই প্রবাসী ও ফুলবাড়িয়া মধ্য পাড়ার সোহরাব মোল্যার মেয়ে এবং ফুলবাড়িয়া পূর্বপাড়া নাছির মোল্যার স্ত্রী। এই ঘটনায় কাজল বেগমের বাবা সোহরাব মোল্যা বাদি হয়ে সালথা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বর্তমানে ঐ গৃহবধূ চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
ঐ গৃহবধূর পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্ত কাজল বেগম উন্নত জীবনের আশায় দুবাইতে দীর্ঘদিন কাজ করে নগদ টাকা ও সোনার গহনে নিয়ে দেশে আসেন। কাজল বেগমের টাকা ও সোনা দেখে লোভে পরে পার্শবর্তী ফুলবাড়িয়া পূর্বপাড়ার মৃত বক্কার মোল্যার ছেলে ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউনুস মোল্যার ভাতিজা নাছির মোল্লা (৩৭) কাজলকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সুখের কথা চিন্তা করে নিজের টাকা ও গহনা বিক্রি করে স্বামী নাছিরের বাড়িতে নতুন ঘর তোলে। এরপর টাকা কম পড়লে কাজল বেগম আবার দুবাইতে পাড়ি জমান। এর কিছু দিন পর স্বামী নাছির হোসেনকে দুবাইয়ে নিয়ে যায়। সেখানে কাজ করে ইনকামের সব অর্থ স্বামী নাছিরের কাছে জমা রাখে।
দুবাই থেকে চার বছর পর কাজল বেগম ও স্বামী নাছির মোল্যা বাড়িতে আসে। কাজল বেগম লক্ষ বুঝতে পারেন তার স্বামী নাছির বিভিন্ন নেশায় আসক্ত ও অন্যত্র পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরেছে। এসবের প্রতিবাদ করলে নাছির কাজল বেগমকে প্রায়ই মারধর করেন। এসব দেখে তার ভাই তাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। গতকাল বিকেলে নাছির ফোন করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নাছির সহ তিন ভাই জসীম মোল্যা (৩০), শাহিন মোল্যা (২৭) মিলে কাজল কে অনেক মারপিট করে। এসময় তলপেটে লাথি মারে ও পায়ের নিচে ফেলে বেধরক মারপিট করে। এক পর্যায়ে কাজল বেগমের রক্তপাত হয় এবং অচেতন হয়ে পরে। এরপর কৌশলে একটা ভ্যান গাড়িতে কাজলকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার ঘটনায় অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে মারধর করে গর্ভ পাতের ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে ভুক্তভুগীর পরিবার ও স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত নাছির মোল্লা বলেন, সে আমাকে অতিরিক্ত সন্দেহ করে। আমি এলাকায় টুকটাক রাজনীতি করি এই জন্য এমন হয়েছে। আমি যদি এলাকায় কারো সাথে পরকীয়া করি তাহলে তার প্রমাণ দিক। কেউ যদি আমার নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায়, তাহলে তার নামে আমি মানহানি মামলা দিব।