রাস্তার পাশে মাছের ঘের। মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া সড়কটি ব্যবহৃত হচ্ছে উভয় ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে। বছরের পর বছর সড়কের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে মাছ চাষ করায় সড়কের বিস্তীর্ণ অংশে ধ্বংস দেখা দিয়েছে। কোন কোন অংশে সড়কটির অর্ধেক কিংবা তার অধিক বিলিন হয়ে গেছে ঘেরে। ফলে যাতায়াত, পন্য পরিবহনসহ যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সড়কটি ব্যবহার করা হাজার হাজার মানুষ। কখনো কখনো যানবাহন উল্টে মারাত্বক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারন মানুষ। সড়কের দুরবস্থার এই চিত্র ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রুপসা গ্রামের। 

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রূপসা গ্রামের কাদির পাওয়ারী বাড়ি এলাকা হতে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত গাব্দেরগাঁও সড়কের উভয় পাশে বিশাল বিশাল মাছের ঘের গড়ে তুলেছেন জাসিম উদ্দিন পল্টু পাটওয়ারী গংরা। ঘেরের ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে আলাদা বেড়ি করার নিয়ম থাকলেও তা মানেননি তারা। এমনকি সড়কের সুরক্ষায় গাইডওয়াল কিংবা নিরাপত্তা জালও ব্যবহার করেননি তারা। সরকারি রাস্তাকে ঘেরের বেড়ি হিসেবে ব্যবহার করলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে বিগত সময়ে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন আইনানুগ ব্যবস্থা। 

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্কুল শিক্ষক হারুনুর রশীদ জানান, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনিতির তোয়াক্কা না করে সড়ককে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে বছরের পর বছর মাছ চাষ করে আসছেন পল্টু পাটওয়ারী গংরা। জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার না করলে সড়কের ভাঙ্গা অংশগুলো অচিরেই সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে। ঘেরের মালিকরা যেন শ্রীঘ্রই সড়কটিকে পূর্বের রূপে ফিরিয়ে দিতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রঞণ করেন। আপনাদের মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে এই দাবী জানাচ্ছি। 

তানভীর হাসান জিসান নামে আরো একজন জানান, বিগত বছরে ঘের থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে ফুটপাতসহ রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙ্গে মাছের ঘেরে বিলিন হয়ে গেছে। রাস্তার সুরক্ষায় ঘের মালিকরা আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। রাস্তার ভাঙ্গা অংশে গাড়ি উল্টে মালামাল, পরিবহনের ক্ষয়ক্ষতি এবং মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অতি শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সম্পুর্ণ রাস্তা ঘেরে বিলিন হয়ে যাবে। 

রফিক পাটওয়ারী বলেন, আমাদের ক্ষতির কোন শেষ নাই। মাছের ঘেরের কারণে আমাদের রাস্তা তছনছ হয়ে গেছে। মালামাল পরিবহন এবং যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘেরের মালিকরা আমাদের রাস্তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিক এটাই আমাদের দাবী।  

এবিষয়ে জানতে ঘেরের মালিক জসিম উদ্দিন পল্টু পাটওয়ারীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অত্যাবশ্যকীয় এ জনদাবীর সাথে আমি একমত পোষণ করছি। আমারও প্রত্যাশা পল্টু পাটওয়ারী গংরা সড়ক সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এলাকাবাসীর দাবী পূরণে আমি আমার অবস্থান থেকে দৃঢ় ভূমিকা পালনে চেষ্টা করবো। 

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস, এম, কাউছার উল আলম (কামরুল) বলেন, বছরের পর বছর পল্টু পাটওয়ারী গংরা এখানে মাছ চাষ করে আসছেন। তারা এখানে ড্রেজিংও করেছেন। নিয়মানুসারে সড়কের সুরক্ষা নিশ্চিত করে মাছ চাষ করার কথা থাকলেও তারা তা করেননি। তাদের স্বেচ্ছাচারীতার কারনে সড়কটির ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলো বিলীন হতে চলেছে। জনসাধারনের দাবী যৌক্তিক। সড়কটিকে সম্পূর্ণরূপে সংস্কারের জন্য যে বিশাল অর্থের প্রয়োজন ইউনিয়ন পরিষদের কাছে তা নেই। আমিও চাই পল্টু পাটওয়ারী গংরা সড়কটি সম্পূর্ণ মেরামতের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।