কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া এলাকার বসতঘরের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া মা ও ছেলেসহ ৩ জনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের লাশ হস্তান্তর করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল নিহতদের লাশ কুমিল্লা থেকে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ৩ টার নিজ গ্রামে নিয়ে আসলে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে চারপাশ।
এ সময় গ্রামের লোকজন লাশ একনজর দেখতে সেখানে ভিড় করে এতে শতশত মানুষ নিহতদের শেষ বারের মতো দেখতে ভিড় জমান। অনেকের চোখে দেখা যায় নিরব অশ্রু। এরপর বিকেল পৌনে চার টায় গ্রামের বড় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাঁদের লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। খুনের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ও পিবিআই পাশাপাশি সিআইডি সহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে।
এ ঘটনার পর এলাকায় এখনো আতংকে আছেন সেখানের স্থানীয়রা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, এমন ঘটনা আমাদের গ্রামে আগে ঘটেনি। যাদের কে হত্যা করা হয়েছে তারা খুবই নিরীহ মানুষ। ঠিক কি কারনে এমন হত্যাকান্ড তা কেউ বলতে পারছেন না। সবাই অতিদ্রুত আসামীদের ধরে এঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে দাবি জানান তারা।
জানা যায়, গত বুধবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে দুর্বৃত্তরা বড় ঘাগুটিয়া ভুঁইয়া বাড়ি গ্রামের শাহ পরানের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (২৫) ও তার ছেলে শাহেদ (৮) পাশের বাড়ির তার মামাতো ভাসুর রেজাউল করিমের মেয়ে তিশা মনি (১৫) কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্বজনেরা জানান, রাতে ছেলে সাহাদ ও আত্মীয় তিশাকে নিয়ে ঘরে ঘুমাতে যান মাহফুজা সকালে তিশাকে বিদ্যালয়ে নিয়ে ডাকতে আসে তার ছোটবোন। কিন্তু অনেক ডাকাডাকির পরও তাঁরা ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে সে জানালা দিয়ে ৩ জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে। পরে তার চিৎকারে অন্যরা বেরিয়ে এসে লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে একে একে ৩ জনকে মাথায় আঘাত করে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ খাটের ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত মাহফুজা আক্তারের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে। এছাড়াও প্রাথমিক ভাবে মহিলাকে অন্তঃসত্তা মনে করা হলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মহিলা অন্তঃসত্তা ছিলো না।