× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নয়নের নেতৃত্বে সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ

হাবিব-পিন্টু গ্রুপিং জোরদার \ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

সৌরভ কুমার দেবনাথ, ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি।

৩১ আগস্ট ২০২৪, ১৯:২০ পিএম

ছবিঃ সৌরভ কুমার দেবনাথ

ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা হাবিব ও পিন্টু গ্রুপের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। আর এ সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে গ্রুপ দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও শুক্রবার সন্ধ্যায় উভয় গ্রুপের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উভয়গ্রুপ পরস্পর উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার পরই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
আজ (শনিবার) স্থানীয় বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় বিএনপির দেওয়া তথ্য মতে, ঈশ্বরদীতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সদস্য ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টা মামলার ফরমায়েশী রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি থাকা জাকারিয়া পিন্টু গ্রুপ নামে দুটি গ্রুপ রয়েছে। হাবিবুর রহমান হাবিব পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হওয়ার পর বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের একটি বৃহত অংশকে বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুলত গ্রুপিং তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষাথর্ী মাহমুদুল ইসলাম শাওন বলেন, ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের ভেতরে স্থানীয় বকাটেরা বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য সেবনের আঁকড়া তৈরী করেছিল। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মাদক উচ্ছেদসহ বকাটেদের কলেজ ক্যাম্পাসে আনাগোনা নিষিদ্ধ করতে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম রবিউল ইসলামের সঙ্গে স্বাক্ষাত করা হয়। স্বাক্ষাত শেষে আমরা কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করে ঈশ্বরদী সদর হাসপাতালের পেছনের গলির দিকে যাচ্ছিলাম। এই সময় পেছন দিক থেকে অজ্ঞাত কারণে রফিকুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি আমাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। খবর পেয়ে থানা ও আমবাগান পুলিশ ফাঁসির সদস্যসহ সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। শাওন আরও বলেন, পরে এ হামলার বিষয়টি স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানানো হলে তারাও এলাকা ঘুরে যান। একই সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে বিষয়টি দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান।
ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা ঘটনার দিন সৌজন্য স্বাক্ষাতসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে আলাপ করে শান্তিপূর্ণভাবে চলে যায়। কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে কি ঘটেছে তা সঠিক আমার জানা নেই।
স্থানীয় বিএনপির আহবায়ক এসএম ফজলুর রহমান, সদস্য সচিব  বিষ্টু সরকার, আব্দুর রাজ্জাকসহ বেশ কিছু নেতা বলেন, ঘটনার দিন সকালে পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব গ্রুপের পক্ষে পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি দাবিদার রফিকুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র যুবক ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সদর হাসপাতালের পেছনের গলিতে গুলি বর্ষণ করেছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে। এরপর বিষয়টি জানার জন্য পৌর, উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু লোকজনকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে ভেবে রফিকুল ইসলাম নয়ন সুকৌশলে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর ছোটভাই উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জাকির হোসেন জুয়েল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান ও মাহমুদ হাসান সোনামনিকে সন্ত্রাসী উল্লেখ্য করে নানারুপ মিথ্যাচার করেছে। এটা খুবই নিন্দনীয় বিষয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌর বিএনপির, যুবদল, ছাত্রদল ,স্বেচ্ছাসেবকদলসহ বিএনপির সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জাকারিয়া পিন্টুর ছোট ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো. মেহেদী হাসান বলেন, রফিকুল ইসলাম নয়ন এতোদিন আওয়ামীলীগের নেতাদের সঙ্গে আতাঁত করে চলেছে। ব্যবসা বানিজ্য করেছে। বিএনপির কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না। তার নামে রাজনৈতিক কোন মামলাও হয়নি। অথচ আজ পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের ছবি ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করছে। ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রফিকুল ইসলাম নয়ন ও তার সহযোগিরা গুলি বর্ষণ করেছে। বিষয়টি জানার পর বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আইন শৃঙ্খলরা বাহিনীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। আর এখন তার দায় আমার পরিবারের উপর চাপানো হচ্ছে। আমরা বিষয়টিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বিষয়টি দলের নীতি নির্ধারকদের নিকট অভিযোগ আকারে জানানো হবে।
হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষের  ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর আমি হামলা করেনি। আমাকে কিংবা আমার পক্ষের লোকজনকে জড়ানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাকরিয়া পিন্টু ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে নানারুপ বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে নয়ন বলেন, আমার নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। আমি তাকে জানিয়েই এই সংবাদ সম্মেলন করেছি।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সদস্য ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,  বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার ভাইদের সন্ত্রাসী উল্লেখ করে  শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করার বিষয়ে রফিকুল ইসলাম নয়ন সংবাদ সম্মেলনে কি বলেছে তা আমার প্রথমে জানা ছিল না। পরে জেনেছি। তবে নয়ন আমার দেওয়া কর্মসুচি বাস্তবায়ন করে। আমার পক্ষের নেতা। বিভিন্ন সময় নয়ন আমার ছবি দিয়ে ব্যানার, ফ্যাস্টুন ও পোস্টাল ছেপে শহরে বিভিন্ন লাগিয়েছে। সে সংবাদ সম্মেলনে আমার ছবি ব্যবহার করবে এটা অস্বাভাবিক কিছু না।
ঈশ্বরদী আমবাগান ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ (আইসি) মো. হাসান বাসির বলেন, ঘটনার দিন ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের জমায়েত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের পেছনে কি ঘটেছে তা আমাদের জানা নেই। এই বিষয়ে কোন অভিযোগও করা হয়নি।
এদিকে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শহরের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় বিএনপির একাধিক সুত্র দাবী করছেন। ###

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.