রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সংঘটিত হত্যা, নাশকতা, ভাংচুরের ঘটনায় আরো দুটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সাবেক স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ১২৮ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া একজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সহ ৪৬ জনের নাম আরেকটি মামলায় রয়েছে।
আইনজীবী জানান, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিক্ষোভ চলার সময় রংপুর মহানগরীর মিনি সুপার মার্কেটের সামনে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওইদিন বাবা আব্দুল মজিদকে দুপুরের খাবার দিতে গেলে হামলাকারীরা মাহমুদুল হাসান মুন্নাকে লাঠিসাডা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক।
এ ঘটনায় আজ (২৯ আগস্ট) বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সাবেক স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা সাবেক এমপি মোতাহার হোসেন, মতিয়ার রহমান, সফুরা খাতুন, ডিউক চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট, রাকিবুজ্জামান আহমেদ, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলসহ ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা করেছে বাবা আব্দুল মজিদ।
অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজু আহমেদ বাবু মামলাটি আমলে নিয়ে কোতয়ালী থানাকে রেকর্ড করার আদেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী আরো জানান, আমরা আশাকরি মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং সঠিক বিচার এবং জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।
অন্যদিকে, একই আদালেত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রংপুর সরকারি কলেজের ছাত্র জিম গুলিবিদ্ধ হওয়ায় ঘটনায় হত্যা চেষ্টা মামলা করেন তার বাবা রবিউল ইসলাম।
এই মামলায় আইনজীবী আলাউদ্দিন আলমগীর জানান, এই হত্যা চেষ্টা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, পুলিশ কমিশনারসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে ১৯ জুলাই রংপুর সিটি পার্ক মার্কেটের সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্বিচার গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় জীম। তার চোখের মধ্যে এখনো গুলি লেগে আছে। বের করা যাচ্ছে না। এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বসবাস করছে জীম।
আইনজীবী আরো জানান, আমরা মামলা করেছি। আশা করছি, দ্রুত তদন্ত এবং বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।