রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তি বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অনেক অপচেষ্টা চলছে, সাম্প্রদায়িক হামলা, মামলা বানিজ্যসহ সারাদেশে ভয়াবহ আইনি সন্ত্রাসবাদি চলছে। দেশে যেমন বৈষম্যের ঠাই নাই, তেমনি হয়রানীর কোন সুযোগ নাই বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা। এসব অপচেষ্টার সাথে জড়িত, তারা ভালো হয়ে যান, না হলে জড়িতদের মুখোস উন্মোচনের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তারা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর আদালত চত্বরে হত্যা মামলায় নিরাপরাধ মানুষকে যুক্ত করার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুশিয়ারী দেন সমন্বয়করা।
সমন্বয়করা বলেন, বর্তমান মামলাগুলোতে যে সব নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মামলায় যুক্ত করা হচ্ছে, মুলত দুটি কারনে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে। একটি হলো ব্যক্তিগত শত্রুতা-আক্রোস ও আর্থ আত্বসাথ। বর্তমানে হত্যা মামলাগুলোতে তিনশো চারশো জনকে আসামী করা হয়েছে, আমরা নথিগুলো চেক করে দেখেছি, অধিকাংশ মানুষেরই এই হত্যাকান্ডের সাথে কোন সংশ্লিষ্টতা ছিলো না। অটোচালক মানিক মিয়া হত্যা মামলার উদাহারণ টেনে বলেন, সেই হত্যা মামলায় ১১৯ জনকে আসামী করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০০ জনই নিরাপরাধ। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের সাথে কথা বলা হয়েছে, যাতে করে ঐ মামলাটি সিআরও থেকে জিআরও তে না যায়। সেই সাথে বাদির সাথে কথা বলে এফিডেভিটের মাধ্যমে যারা নিরাপরাধ তাদের জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তারা আরো বলেন, মামলায় এমন কিছু মানুষ আসামী হয়েছে, যারা চায়ের দোকান করে, বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক। অথচ তারা এসবে অভিযুক্ত নয়। এসব বিষয়ে সমাধানের জন্য মেট্রোপলিটন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে কথা বলা হয়েছে। যাতে করে কোন নিরাপরাধ মামলা আসামী না হয়, হয়রানীর শিকার না হয়।
সমন্বয়করা হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, যারা এসব আইন সন্ত্রাসবাদি করছেন, আপনারা ভালো হয়ে যান, যাতে করে তৃতীয় কোন সংবাদ সম্মেলন করে মুখোস উন্মোচন করতে না হয়। আপনাদের নাম উল্লেখ করে আপনাদের বিরুদ্ধে যাতে কিছু করতে না হয়। এরপরও কেউ এসবে জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় সমন্বয়করা বলেন, যারা মামলা করতে চান, আপনারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে যে ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্যানেল আইনজীবী রয়েছে, তাদের মাধ্যমে মামলা করবেন। কোনভাবেই মামলা করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কিংবা প্ররোচিত হবেন না। প্রয়োজনে আপনাদের বিনামুল্যে আইনি সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলন যারা নিরাপরাধ সত্ত্বেও মামলায় যুক্ত হয়েছে কিংবা যুক্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে, তাদের কে মাহিগঞ্জ-হারাগাছ, কোতয়ালী-তাজহাট ও হাজিরহাট-পশুরাম মিলে তিন জোনে আইনি সহায়তা নেয়ার অনুরোধ জানান সমন্বয়করা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে প্যানেল আইনজীবি রোকনুজ্জামান রোকন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ, জেলার সমন্বয়ক ইমরান হোসেন ও মোতাওয়াক্কিল।