ভোলার চরফ্যাসনে পাকা সীমনা প্রাচীর দিয়ে ৬ মাস অবরুদ্ধ করা তিন পরিবারকে অবমুক্ত করলেন প্রশাসন। এনিয়ে গণমাধ্যমে ’তিন পরিবার অবরুদ্ধ মই বেয়ে চলাচল’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভূমি মালিকের দেয়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে অবরুদ্ধ পরিবারের চলাচলের পথ অবমুক্ত করে করে দেন। এতে অবরুদ্ধ পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।
জানাযায়,জিন্নাগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাদ্রাজ গ্রামের প্রভাবশালী সাবিনা আক্তার নামের এক নারী ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনসহ তিন পরিবারের কাছে ৪৮ শতাংশ জমি বিক্রি করে ভোগদখল বুঝিয়ে দেন। জামাল উদ্দিনসহ তিন পরিবার প্রায় ১০ বছর যাবত ওই জমিতে বাড়ি ও বসত ঘর নির্মান করে ভোগ দখলে আছেন। সম্প্রতি সময়ে বিক্রিত ভূমি মালিক সাবিনা আক্তার ওই বিক্রিত জমি ফের নিজ নামে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ক্রয় সুত্রে মালিক জামাল উদ্দিনসহ অপরাপর অংশিদারকে চাপ দেন।এতে তারা রাজি না হওয়ায় তাদের দলিলে দেয়া উল্লেখিত চলাচলের রাস্তায় পাকা সীমানা প্রাচীর তুলে অবরুদ্ধ করে দেন। পরে বাধ্য হয়ে অবরুদ্ধ তিন পরিবারের চার শিক্ষার্থীসহ ১৫ জন সদস্য অন্যের আবাদি জমি দিয়ে চলতি বর্ষার মৌসুমে হাটু পানি ভেঙে ও সীমানা প্রাচীরে ওপর দিয়ে মই বেয়ে চলাচল করতেন। সমাজপতিদের কাছে প্রায় ৬ মাস ধর্ণা ধরে কোন সুরাহা না পেয়ে বাধ্য হয়ে গত ১৮ অগস্ট ভূক্তভোগী জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগটি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে নির্দেশ দেন। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মুহাম্মদ সালেক মুহীদ সীমানা প্রাচীর ভেঙে দিয়ে অবরুদ্ধ তিন পরিবারের চলাচলের রাস্তা অবমুক্ত করে দেন।
স্থানীয় বাসিন্ধারা জানান, অভিযুক্ত নারী সাবিনা আক্তার নিজের ক্ষমতার বলয়ে সরকারী খাস জমিসহ পাকা সীমানা প্রাচীর তুলে জামাল উদ্দিনের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে দেন। সরকারী খাস জমি ও জামাল উদ্দিনের চলাচলের পথে দেয়া সীমান প্রাচীর সম্পূর্ন তুলে দেয়ার জন্য তারা প্রশাসনের কাছে দাবী জানান।
অবরুদ্ধ জামাল উদ্দিনসহ তার পরিবারের সদস্যরা জানান, দীর্ঘ ৬ মাস সীমানা প্রাচীরে অবরুদ্ধ থাকার পর আজ প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা চলাচলের রাস্তা ফিয়ে পেয়েছেন।এতে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। আর মই বেয়ে নয় এখন চলাচলের পথ দিয়ে হেটেই স্কুল ও কলেজে যেতে পারবে তাদের পরিবারের শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক জানান, অবরুদ্ধ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সীমনা প্রাচীর ভেঙে দেয়া হয়েছে।
সহকারী কমিশনার(ভূমি) মুহাম্মদ সালেক মুহীদ জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হকের নির্দেশ মতে ভুক্তভোগীর অভিযোগের আলোকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় জানা যায় অভিযুক্ত নারী সাবিনা আক্তার সরকারী খাস জমিসহ ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনের চলাচলের পথে সীমানা প্রাচীর তুলে ভুক্তভোগী তিন পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় তিনি অবৈধ ভাবে দেয়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে দিয়ে অবরুদ্ধ পরিবারের চলাচলের পথ অবমুক্ত করে দেয়া হয়েছে।