ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে একদল দুস্কৃতকারী বিভিন্ন স্থানে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ লুটপাট করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হামলা ছাড়াও সাধারণ মানুষও দুষ্কৃতকারীদের সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামে।
গত ৫ আগস্ট আনুমানিক রাত নয়টার দিকে মহাদিপুর গ্রামে মাহবুল আলম নামে এক ব্যবসায়ীর নির্মাণাধীন বাসভবন ও কমিউনিটি সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর এবং একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় নগদ ১২ লক্ষ টাকা লুটসহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই ব্যবসায়ী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুল আজিজ মিয়ার ছেলে মাহবুল আলম কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়িক কারণে ঢাকার মিরপুরে পরিবারসহ বসবাস করছেন। মাস ছয়েক আগে তিনি গ্রামে একটি বাসাবাড়ি ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বাড়ির পাশে বিভিন্ন গাছগাছালির বাগান রয়েছে। মাহবুল আলমের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে একই গ্রামের বদরুল ইসলাম নির্মাণাধীন বাসা, কমিউনিটি সেন্টার ও বাগান নিয়ে বিভিন্ন ভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত মাহবুল আলম জানান, ঘটনার দিন বদরুল আলমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন দুস্কৃতকারী তার নির্মাণাধীন বাসাবাড়ি ও কমিউনিটি সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। তারা একটি প্রাইভেট কারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, হামলাকারীরা বাসায় টাকা নগদ প্রায় ১২ লক্ষ টাকা লুট করাসহ আড়াই লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। রাতের আঁধারে এমন নারকীয় তাণ্ডবের সময় বাগানের দুই শতাধিক সুপারি গাছ আগুন দেয়ার পাশাপাশি অর্ধশত লটকন ও পেপে গাছ কর্তন করে হামলাকারীরা। এতে সবমিলিয়ে অন্তত ২০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করেন তিনি।
এই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এমনকি কোন রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সমর্থনও করেন না। শুধুমাত্র ঈর্ষান্বিত হয়েই তার বাসাবাড়ি ও কমিউনিটি সেন্টারসহ বাগানে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার সময় কেয়ারটেকার শাহাবুল ও মাজেদুল জীবন বাঁচাতে সটকে পড়েন। এ ঘটনায় তিনি এখন পর্যন্ত আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি অবগত করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।