বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টানা ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ব্যাপক রক্তপাতের মধ্যদিয়ে পতন হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
ওই আন্দোলনে রাজপথে লাশের সারি, পুলিশের বুলেটের সামনে আবু সাইদের বুক চিতিয়ে দেয়া, মুগ্ধের পানি বিতরণ আর শিক্ষার্থী নিপিড়ন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ঘটে যাওয়া নানা অসঙ্গতি সহ শিক্ষার্থীদের আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে মৌলভীবাজার শহরের দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি একেঁছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মূলত বৈষম্যহীন সম্প্রীতির বাংলাদেশের বার্তা দিতে চান। গ্রাফিতিতেও এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। সবমিলিয়ে রঙের কম্পোজিশনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নানা স্মৃতি তুলে ধরেছেন রং-তুলিতে।
গ্রাফিতি কর্মসূচিতে যুক্ত মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সল আহমদ জুনেদ জানান, আমরা চাচ্ছি এখানে আন্দোলন রিলেটেড বিষয় গুলো ফুটিয়ে তুলতে। যেমন আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পানি দিচ্ছিলেন আমাদের মুগ্ধ ভাইয়া, রংপুরে শহীদ হয়েছেন আবু সাইদ সহ যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতিটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। অর্থাৎ আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে হবে, আগামীর বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে,আগামীর বাংলাদেশ হবে সব শিক্ষার্থীর বাংলাদেশ।
শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের দমনপীড়নের ইতি ঘটিয়ে ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর পুলিশ বিহীন জেলা শহরে প্রতিটি সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ে আসা, বাজার মনিটরিং, পুলিশ বক্স ও থানা সহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিস্কার করার পাশাপাশি সড়কের পাশে দেয়ালে গ্রাফিতি অংকনও চলছে সমান তালে।
কিওর এন্ড সার্কাস্টিং স্কুলের যৌথ প্রযোজনায় পাবলিক ইভেন্টের আওতায় কর্মসুচির নাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি পেস্ট টু পয়েন্ট জিরো।
মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের চৌমুহনা এলাকার মেন্টরস পয়েন্ট থেকে পৌরসভার গেট পর্যন্ত, কাশীনাথ কলেজ থেকে সরকারি কলেজের গেট পর্যন্ত এবং সদর হাসপাতের বাহিরের দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে আয়োজকরা পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকে ঠিক করেন গ্রাফিতিতে রঙের কম্পোজিশন কী হবে সেটা সিলেক্ট করা থেকে শুরু করে কার্যক্রমে অংশ নেয়া সদস্যদেরও পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সিলেক্ট করা হয়।
এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের পরে যে প্রজন্ম আসবে মূলত তাদের বার্তা দিতেই গ্রাফিতি আঁকা। তারা যেন বুঝতে পারে বৈষম্য'র বিরুদ্ধে আমাদের ত্যাগ আর আন্দোলনের মাধ্যমে এই বাংলাদেশ পেয়েছি।