৫ আগষ্ঠ দেশে স্বরণকালের বৃহত্তম ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ও তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর পুরো দেশের মতো মৌলভীবাজার জেলা জুড়েও চলে সরকারি স্থাপনা সহ বিভিন্ন থানায় ক্ষুব্ধ জনতার হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ। আতঙ্কে থানা সহ কর্মস্থল ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান কনস্টেবল,উপ-পরিদর্শক,পরিদর্শক থেকে শুরু জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
পুলিশ শুন্য হয়ে পড়ে জেলার সব গুলো পুলিশ স্টেশন। বন্ধ হয়ে পড়ে সব ধরণের পুলিশি কার্যক্রম। তবে সেনা সদস্যদের নেতৃত্বে থানা সহ পুলিশের স্থাপনা গুলোর নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য ও আনসার সদস্যদের। অবশেষে বিরাজমান শ্বাসরুদ্ধকর এমন পরিস্থিতির ৬ দিন পর মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানার স্ব স্ব কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন পুলিশ সদস্যরা।
সরেজমিন ঘুরে রোববার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার বাহিরের গেটে নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পালন করছেন কর্তব্যরত সেনা সদস্যরা। ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়,স্থাপনার জানালা সহ বিভিন্ন অংশে ভাঙচুরের চিহ্ন। বাহিরে ওসি সহ পুলিশের ব্যহৃত গাড়িগুলোও রাখা। ওই গাড়ি গুলোর সামনের গ্লাস ইটের আঘাতে ভেঙে গেছে। ভিতরের কক্ষে গিয়ে দেখা যায় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল ইসলাম ও ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিজ কক্ষে বসে আছেন।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল জানান, আমি সহ কিছু কর্মকর্তারা আজ থেকে যোগদান শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ৫ আগষ্ঠ এর অনাকাঙ্খিত ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেক ইকুপমেন্ট খোয়া গেছে। আমরা চেষ্ট করছি থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে কিন্তু আমাদের অনেক সরঞ্জাম নেই। আমরা আমাদের চলমান ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে দাবি-দাওয়া নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছি। এটা স্বাভাবিক পর্যায়ে আসলে আমরা কাজ শুরু করতে পারব।
কর্মস্থলে পুলিশের যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান। রোববার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানায় পুলিশ যোগদান শুরু করেছে। আশা করি কাল (সোমবার) সকালের মধ্যেই সবাই যোগদান করবেন এবং কাজ শুরু করবেন।
এদিকে রাজধানী ঢাকা সহ বড় বড় শহর ও দেশের অন্যান্য জেলার মতো মৌলভীবাজারেও বিভিন্ন থানায় ভাঙচুর হয়। এর মধ্যে মৌলভীবাজার মডেল থানা, শ্রীমঙ্গল থানা, কুলাউড়া ও জুড়ী থানায় চালানো হয় হামলা ও ভাঙচুর।
তবে জেলার কোন পুলিশি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের খবর মেলেনি। এর বাহিরে অন্য থানাগুলো ছিলো অনেকটাই ভাঙচুর থেকে মুক্ত,নিরাপদ।