কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জমি লিখে নিতে বাবা মাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আভিযোগকারী ব্যক্তি উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের পূর্বপাড়ার এলাকার মৃত আবুল হোসেন ভূইয়ার ছেলে ধন মিয়া।
অভিযুক্ত সন্তানরা হলো, লিটন (৫০), আবুল হোসেন ৪০ , মোখলেছ (৩৫)। আজ মঙ্গলবার ৩০ জুলাই এ প্রতিনিধিকে এ তথ্য জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের পূর্বপাড়ার এলাকার মৃত আবুল হোসেন ভূইয়ার ছেলে ধন মিয়া। তার দুইটি সংসার রয়েছে। দুই সংসারে ৭ জন ছেলে ৮ জন মেয়ে। ১২ বছর আগে বড় বউয়ের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ধন মিয়া ছোট স্ত্রীকে নিয়েই সংসার করছেন। ২৫ বছর আগেই বড় বউয়ের সংসার আলাদা করে দেন ধন মিয়া। ওই সংসারে চার ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে। ছোট বউয়ের চার ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় বউয়ের মৃত্যুর পর বাধে বিপত্তি। শুরু হয় সম্পত্তি বাটোয়া নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব।
জোর পূর্বক সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা বন্ধ করতে ও একাধিক বার নির্যাতনের বিচার এবং জিবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও কোন সমাধান পাচ্ছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারটির দাবী।
বাবা ধন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি জমি বিক্রি করে বড় বউয়ের সন্তানদের প্রবাসে পাঠিয়েছি। তারা আমার কোন খোঁজ রাখে না। বরং সম্পত্তি লিখে নিতে আমাকে কয়েক দফায় মারধোর করেছে। আমি থানা পুলিশের আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখান থেকে সব মিট করে দিলেও আমার প্রথম পরিবারের সন্তানরা বিচার মানে না। আমার ছোট ছেলে জাফরনগর প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার নাম মোখলেছ। সে আমাকে মারধোর করেছে। আমি ২৮ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছি। আমি আমার ছেলের বিচার চাই।
এ বিষয়ে দ্বিতীয় পরিবারে সন্তান কুতুবউদ্দিন বলেন, আমার বাবাকে তার বড় বউয়ের সন্তানরা মারধোর করে সম্পত্তির জন্য। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে দায়ের কোপ দিয়ে জখম করে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে অভিযোগকারি ধন মিয়ার ছোট বউ রোকেয়া বেগম বলেন, সম্পত্তির ভাগ নিতে আমাকে ও আমার স্বামীকে মারধোর করে তার বড় বউয়ের সন্তানরা। আমার ভাত খাওয়ার থালাটা পর্যন্ত তারা কেড়ে নিয়ে গেছে। তাদের অত্যাচারে বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমি তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছেলে মোখলেছুর রহমান জানান, আমার বাবার বয়স হয়েছে। তার ছোট বউয়ের পরিবার বাবাকে জিম্মি করে আমাদের সকল সম্পত্তি লিখে নিয়েছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। উল্টো বাবার ছোট বউয়ের সন্তানরা আমাদের মারধোর করে। আমি কিশোগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম মিয়ার বলেন, ধন মিয়া সম্পর্কে আমার চাচা হয়। আমরা সামাজিক ভাবে তার দুই পরিবারকে মিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। ধন মিয়া তার সম্পত্তির বেশি ভাগ অংশই তার ছোট বউয়ের পরিবারের সন্তানদের দিয়ে দিয়েছেন। পরে সামাজিক ভাবেও ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়েছি। ধন মিয়া চাইলেই এর সমাধান হয়ে যেতো। ভাইদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে তবে বড় বউয়ের সন্তানরা তার বাবা মাকে মারধোর করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই।
ভৈরব কুলিয়ারচর সার্কেল এএসপি দেলোয়ার হোসেন জানান, বাবাকে মারধোরে অভিযোগ পেয়েছি। ধন মিয়ার দুই সংসার। তার দুই পরিবারই কোর্টে মামলা করেছে। ভৈরব থানায় তাদের নিয়ে সমাধানও হয়েছে। কিন্তু কেন তারা আবার বিবাদে জড়াচ্ছে আমি জানি না। বাবা জিবিত আছে তাই তিনিই এর সমাধান দিতে পারবে। বাবা যদি সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।