বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে বহিরাগত কিছু লোকজন এসেছিলো, আমাদের কাছে সেই সব তথ্য আছে।
পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করা হয়েছে। ওয়ারলেস সেট পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এসব বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরের দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েল ক্ষতিগ্রস্থ হলসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন, তারা অনেক গুলো গাড়িতে আগুন দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে, মালামাল পুড়িয়ে ফেলেছে , ছাত্রদের বঙ্গবন্ধু আবাসিক হলে আগুন দিয়েছে। হলের ক্ষতিসাধন করেছে।
এসব কারা করছে আমাদের কাছে সেই সব তথ্য আছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভেতরে ঢুকে এই অরাজকতা করেছে। এসব বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবার বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন আছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, কারা কারা এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি, অনেক তথ্যই আমাদের কাছে এসেছে সব এখনই বলতে চাই না বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সহ আশে পাশের এলাকায় যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিলো আমরা ধৈয্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি।
তিনি আরো বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে বা এর সমর্থনে আজও যদি কোনও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাহলে আমরা কিছু বলব না, তবে নৈরাজ্যকর কোনো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হলে আমরা কঠোর ব্যাবস্থা নেবো বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন তিনি।
এদিকে বাদ জোহর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সমমনা দল সমূহের ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের গায়েবানা জানাযা রংপুর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেটের সামনে কোটা বিরোধী আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আবু সাঈদের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য মঙ্গলবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রংপুর নগরীতে মিছিল বের করে পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় আবু সাঈদ তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এরপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আবু সাঈদ একাই অবিচল দাঁড়িয়ে মোকাবিলার চেষ্টা করেন। পুলিশের সামনে বুক উঁচিয়ে দেয়। এসময় বুকে গুলি লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাঈদ। তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় রংপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। এর আগে জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে তার জানাযা হয়।