নিখোঁজের ১দিন পর নওগাঁর বদলগাছীর ছোট যমুনা নদী থেকে নেশারুল হামিদ পিন্টুর (৫৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। ৯ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে বদলগাছীর বালুভরা ইউপির দোনইল গ্রামের যমুনা নদীর টেক নামক স্থান থেকে নিখোঁজ পিন্টুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বদলগাছী থানা পুলিশ জানায়।
নিহত নেশারুল হামিদ পিন্টু বদলগাছী উপজেলা সদর ইউপির তেজাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আ: রাজ্জাকের ছেলে।
এর আগে সোমবার ৮ জুলাই দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০মিনিটের দিকে উপজেলার সদর ইউপির তেজাপাড়া হিন্দুপাড়া ঘাটে ভাতিজা রাসেলকে নিয়ে পিন্টু নদীতে গোসল করতে আসে গোসলের সময় নদীর ওপাড় থেকে এপাড় আসার সময় নদীর মাঝখানে এসে পিন্টু নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে না পেয়ে বিষয়টি উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কে জানানো হলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। তবে উপজেলাতে ডুবুরি না থাকায় রাজশাহী বিভাগীয় ইউনিটের সহযোগিতার ডুবুরি এসে নদীর তলদেশে তল্লাশি করেও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তির কোন সন্ধান মেলেনি। খবর পেয়ে থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে বদলগাছীর নিহতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, দুপুর ৪টার দিকে দোনইল গ্রামের লোকজন নদীতে গোসলের করতে গেলে নদীর মাঝ দিয়ে লাশটিকে ভেসে যেতে দেখে। সে সময় নদীতে গোসল করছিল বাবর আলীর ছেলে। বিষয়টি দেখা মাত্র বাবর আলীর ছেলে দৌড়ে এসে বাড়িতে বাবর আলীকে বিষয়টি জানালে বাবর আলী ও বাবর আলীর ফুপাতো ভাই তৈয়ব আলী দুজন মিলে লাশটিকে নদী থেকে উদ্ধার করে এবং লাশটিকে চিনতে পেরে নিহতের বাড়িতে নিয়ে আসে। লাশ আনার পর ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের এস আই মানিক ও এ এস আই মতিউর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী মন্টু চন্দ্র মন্ডল জানান, গত সোমবার দুপুর আনুঃ ১টা থেকে ১টা ৩০মিনিটের দিকে পিন্টু তার ভাতিজা রাসেলকে নিয়ে নদীতে গোসল করছিলো। এসময় পিন্টু নদীর এপার থেকে সাঁতার দিয়ে নদীর ওপাড়ে যায়। ভাতিজা রাসেল এপাড় থেকে বড় আব্বুকে ডাক দিলে পিন্টু একটু দম নিয়ে পুনরায় নদীর ওপাড় থেকে এপাড়ে সাঁতার দিয়ে আসার সময় মাঝপথে প্রায় ১৫০মিটার দুরে ভেসে যেতে থাকে। কিছু পর নদীর মাঝে ডুবে যায়। আমি ঘটনাটি দেখে পিন্টুর ভাতিজা রাসেলকে বলি যে তোর বড় আব্বা ডুবে গেলো। এবং গোসল করতে আসা একই গ্রামের উজ্জলকে বিষয়টি জানালে গ্রামবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা করেও পিন্টুর লাশের কোন সন্ধান পায় না।
দোনইল গ্রামের আফসার আলীর ছেলে বাবর আলী বলেন, আজ দুপুর ৩টার দিকে আমার ছেলে ও ভাবী গোসল করার সময় লাশ ভেসে আসছ দেখতে পেয়ে আমাকে জানায়। আমি ও আমার ফুপাতো ভাই তৈয়ব নদীর মাঝ থেকে লাশটিকে নিয়ে আসি এবং নিহতের বাড়িতে পৌঁছায়।
এ ব্যপারে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, সোমবার দুপুরে নদীতে গোসলের সময় পিন্টু নামে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হন। ফায়ার সার্ভিসের ডুবড়িরাও চেষ্টা করে নিখোঁজ পিন্টুর লাশের কোন সন্ধান পায় নি সেদিন। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ দোনইল গ্রামের লোকজন নদী থেকে উদ্ধার করে।পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশের সুরুতহাল রিপোর্ট করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।