× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সিলেট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি নেই, বানভাসিদের দুর্ভোগ চরমে

মাহমুদ খান, সিলেট

০৭ জুলাই ২০২৪, ১৭:৪৪ পিএম

সিলেটে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি হয়নি। জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে কিছুটা উন্নতি হলেও বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জে এখনও পানির নিচে তলিয় আছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র, আত্মীয়স্বজনের বাসায় বা উঁচু রাস্তায় কিংবা ঘরে বিছানা উপরে তুলে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। দীর্ঘ সময় থেকে এসব এলাকা পানিতে তলিয়ে থাকায় বানভাসিদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকলেও লোকালয় ও নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে কমছে। বর্তমানে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল না আসলে দ্রুত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজারের বেশ কিছু এলাকা এখনও প্লাবিত। ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, দোকানপাট এখনও তলিয়ে রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে, সেখান থেকেও পানি নামছে ধীর গতিতে। এতে দীর্ঘমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ বাড়ছে কয়েকগুণ। এসব এলাকায় চরম খাদ্য ও পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই বানভাসিরা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জকিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। সেদিনই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। ছেলে-মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছি। আমরা লোক লজ্জার ভয়ে কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারছি না। সরকারিভাবে কিছু শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে, তবে এতো অল্প খাবারে শুধু মাত্র একবেলা খেয়েছি। গত একদিন থেকে না খেয়ে আছি

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বাজারের ব্যবসায়ী সবুর আলি জানান, গত এক মাস থেকে দোকানে কোন ব্যবসা হচ্ছেনা। ক্রেতা কম। তাছাড়া নদীর পানি উপচে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করছে। এতে অনেক পণ্য নষ্ট হয়েছে। তারপরও জীবিকা নির্বাহের জন্য দোকান খোলা রাখছি। 

সিলেট জেলা প্রশাসনের শনিবার (৬ জুলাই) রাতের বন্যা পরিস্থিতির তথ্যমতে, জেলার ১ হাজার ১১৬ট গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যাকবলিত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৭ জন মানুষ। জেলার ২১৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯ হাজার ৮৩৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃ‌ষ্টি হয়েছে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, সিলেটে ও মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যদিও এখন সুরমা নদীর একটি পয়েন্ট ও কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে কয়েক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.