ছবি: প্রতিনিধি
বরিশালে পরিবেশ বান্ধব ও বজ্র প্রতিরোধক তালগাছ বিলুপ্তির পথে। তালগাছের পাতার সঙ্গে সুপরিচিত বাবুই পাখির তৈরি ঝুলানো বাসা সবার পরিচিত।
এখন আর হাজার হাজার পাখির কিচির-মিচির ডাক ও মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে না। ছোট বেলায় একটা কবিতা পড়তাম- ঐ দেখা যায় তাল গাছ ঐ আমাদের গাঁ, ঐখানেতে বাস করে কানাবগীর ছা। কিংবা- তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে- বইয়ের পাতায় কবিতা থাকলেও বাস্তবে আজ কোন মিল নেই।
মহেশখালীতে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা কারী তাল গাছ
ঝড় কিংবা টর্নেডো মোকাবেলায় এবং বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ। এছাড়াও কথায় আছে তালগাছ মানেই গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। আকাশ ছুঁই ছুঁই সারি সারি তালগাছ সেই আদিকাল থেকে গ্রামবাংলার শোভা বৃদ্ধিতে অকৃত্রিমভাবে ভূমিকা রেখে চলছে।
সারি সারি তালগাছ দেখে মানুষের মন জুড়াতো। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় এবং শোভা সৃষ্টিতে যে তালগাছের জুড়ি মেলেনা। সেই তালগাছ প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
নিকট অতীতেও যে তালগাছ শোভা ছড়াতো গ্রামবাংলায় এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতো। বর্তমান সময়ে তেমনটি আর চোখে পড়েনা। বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রক্ষায় সরকারি এবং বে-সরকারি পর্যায়ে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন চোখে পড়ার মত হলেও গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের বাহক আর নানা উপকারি এই তালগাছ রক্ষায় তেমন কোন পদক্ষেপ না থাকায় ক্রমেই এটি হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও গ্রামের আনাচে কানাচে আর বিভিন্ন সড়ক আর মহাসড়কের পাশে সারি সারি তালগাছ শোভা পেতে দেখা গেছে কিন্তু সেই চিরচেনা দূশ্য আর চোখে পড়ে না।
এখন হঠাৎ কোন কোন রুপসী গ্রামবাংলায় দুচারটি তালগাছ চোখে পড়ে কিন্তু সেসব তালগাছ আবার কারো লাগানো নয় এমনিতেই এসব তালগাছ ঝোপ ঝাড়ে বা জঙ্গলে বেড়ে উঠেছে। কেউ তাল খেয়ে তালের বীজ ফেলে রেখে গেছে সেই বীজ থেকেই মুলত হয়ে ওঠেছে এসব তালগাছ। অতীতে অপরিচিত মানুষের বাড়ী, জমি, পুকুর, মাঠ, মসজিদ, মন্দির, মঠ, গির্জা, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থান চেনানোর জন্য সেক্ষেত্রে বলা হত উচুঁ ঐ তালগাছটির পাশে।
এমনকি সরকারি ও বেসরকারি কাজে নানান দিক নির্দেশনার ক্ষেত্রেও তালগাছের সহায়তা নেওয়া হত। তালের পিঠা, তালের গুড় আর তালের রস সব মানুষের নিকট খুবই মজাদার খাবার। বিশেষ করে তালের পিঠা দিয়েই অতীতে জামাইয়ের বাড়ী, শ্বশুর বাড়ী, বেয়াই বাড়ী, মেয়ের শ্বশুর বাড়ী, ছেলের শ্বশুর বাড়ীসহ নানান আত্মীয়তার বন্ধন রচিত হত।
অতীত সময়গুলোতে তালপিঠা ছাড়া গ্রামবাংলায় আত্মীয়তা কল্পনাই করা যেত না। এছাড়াও তালগাছের পাতায় তৈরি করা হয় নানা রংঙের বা ডিজাইনের হাতপাখা। কিন্তু গ্রামবাংলা থেকে ক্রমেই তালগাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাংলার পরিবারগুলোতে নেই সেই তালপাতার পাখা ও তাল পিঠা দিয়ে আত্মীয়তা। সেই তালগাছ আজ প্রকৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh