বিগত আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত জনাকীর্ণ অবস্থায় ৮ বাই ৮ ফিট ঝুপড়ি ঘরে বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে জীবনযাপন করে আসছেন রংপুরে ১১টি ক্যাম্পের বসবাসরত উর্দুভাষী (বিহারী সম্প্রদায়)।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ক্যাম্পগুলোতে উর্দুভাষী (বিহারী সম্প্রদায়) যে অবস্থায় রয়েছে সে অবস্থায় থাকবে এবং তাদের স্থায়ী পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত বিনামূল্যে পানি, বিদ্যুৎ ও মাসিক ত্রাণ প্রদান করা হয়। এরপর সরকার বদল হওয়ার পরেও এই আদেশ বহাল থাকে।
২০০৫ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার সকল ক্যাম্পের বিদ্যুৎ একযোগে বন্ধ করে দিলে প্রচণ্ড তাপদাহ থাকায় সে সময় ১৮ টি গর্ভবতী মহিলা ঢাকা জেনেভা ক্যাম্পে মৃত্যৃবরণ করেন। একই কারনে অন্যান্য ক্যাম্পে অনেকেই মৃত্যুসহ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় হাইকোর্টে একটি আদেশ জারি করলে তাৎক্ষনিক ভাবে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বহাল করার মাধ্যমে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রসাশনের অধীনস্থ হয়ে ক্যাম্পগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে।
সারাদেশে যখন প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরছে ঠিক এমন সময় রংপুর নেসকো কোম্পানির দায়িত্বরত কর্মকর্তার আদেশে ক্যাম্পে ডিজিটাল মিটার স্থাপন ও অন্যাথায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি ও নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে প্রচণ্ড তাপদাহে ক্যাম্পের প্রিপেইড মিটার সংযোগ স্থাপন না করার আহবান জানিয়ে ও পূর্নবাসন না হওয়া পর্যন্ত সকল ক্যাম্পে বিদ্যুৎ বহাল ও উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে সোমবার (৬ মে) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ষ্ট্র্যান্ডেড পিপল’স জেনারেল রিহ্যারলিটেশন কমিটি রংপুর শাখার আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পাশাপাশি মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, এসপিজিআরসি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তিন বার সাক্ষাত করিয়াছেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদের সকল সুযোগ-সুবিধা বহাল থাকবে।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন না করা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন এসপিজিআরসি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সওকত সাহেব, রংপুর শাখার সভাপতি শরফুদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, দপ্তর সম্পাদক তইয়ব হোসেন, সহ-দপ্তর সম্পাদক শমসের আলমসহ রংপুরের ১১টি ক্যাম্পের ইনচার্জগণসহ রংপুরে বসবাসরত উর্দুভাষীরা (বিহারী সম্প্রদায়)।